ঢাকা     শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ ||  শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

ডোনাল্ড লু’র সফর ঘিরে চাউর রাজনৈতিক অঙ্গন

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:০১, ১৩ মে ২০২৪   আপডেট: ২৩:০৩, ১৩ মে ২০২৪
ডোনাল্ড লু’র সফর ঘিরে চাউর রাজনৈতিক অঙ্গন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু/ ফাইল ছবি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আবারও বাংলাদেশ সফরে আসছেন। মঙ্গলবার (১৪ মে) দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন তিনি। ডোনাল্ড লুর সঙ্গে রাজনৈতিক পর্যায়ে নয়, বরং আলোচনা হবে কর্মকর্তা পর্যায়ে। এ সফরে তিনি ব্যবসা-বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, নাগরিক অধিকারসহ দুই দেশের অগ্রাধিকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে আলোচনা করবেন। তবু, তার এবারের সফর ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চর্চা হচ্ছে বেশি।

গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কোনো কর্মকর্তার প্রথম সফর এটি। এ পর্যন্ত চারবার বাংলাদেশ সফর করেছেন লু। এর আগে, গত বছরের জুলাইয়ে তিনি সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেন। সে সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার সঙ্গী হয়ে ঢাকায় আসেন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এবং মার্কিন ভিসানীতিসহ নানামুখী তৎপরতার মধ্য দিয়ে সেই সফরটি আলোচিত ছিল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ডোনাল্ড লুর সফরে সাক্ষাতের তালিকাতেও থাকছে সরকারি কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজ। ১৪ ও ১৫ মে দুদিন থাকবেন তিনি। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে বলা হচ্ছে, ভারত ও শ্রীলঙ্কা সফরের পর বাংলাদেশ সফরে আসছেন ডোনাল্ড লু। তার এ সফরের মধ্য দিয়ে দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার হবে বলে প্রত্যাশা ওয়াশিংটনের। যুক্তরাষ্ট্র যে মুক্ত, অবাধ ও সমৃদ্ধ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল দেখতে চায়, ডোনাল্ড লুর সফরে সেটাই গুরুত্ব পাবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য মতে, ঢাকা সফরে দুদেশের সহযোগিতার সম্পর্ক ছাড়াও জলবায়ু সংকট ও দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা নিয়ে আলোচনা করবেন ডোনাল্ড লু।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন মার্কিন এই কূটনীতিক। সচিব জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার নানা দিক নিয়ে আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, নতুন সরকার গঠন হওয়ার পর তার প্রথম সফর হবে এটা। নির্বাচনের আগে যে চিত্র ছিল, এখনকার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। কেননা নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। স্থিতিশীল একটি সরকার। সরকার নিয়মিত কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সুতরাং সব দেশ আমাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চায়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা-ভিসানীতির মতো ইস্যুতে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কে যে রেখাপাত হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হবে। ডোনাল্ড লুর সফরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হবে বলেও আশাবাদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।

ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরের প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের দেওয়া এক নৈশভোজে যোগ দেবেন। সফরের দ্বিতীয় দিন বুধবার তিনি প্রথমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে ও পরে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। সফরে ডোনাল্ড লু নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন।

এদিকে, ডোনাল্ড লু’র এই সফরকে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। সোমবার (১৩ মে) দুপুরে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আবারও আমেরিকার মদদে বিএনপি উত্তেজনা ছড়াবে, সেটা মনে করার কোনো কারণ নেই। এখানে কে আসছে তা নিয়ে ভাবছি না। যাদের প্রেসিডেন্টের কথা ইসরায়েলই শোনে না। আমরা যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার, আমরা কাকে ভয় পাব? মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে আসছেন দুই দেশের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যা বলছেন তার বাস্তবায়ন আমরা দেখব।

অপরদিকে, বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিসে দলের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে মার্কিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশ আগমন প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ডোনাল্ড লুর আসা নিয়ে কিছু আসে যায় না। তার আসাটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ না। কুকি চিনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার ব্যর্থ। লু তো অনেক দূরের কথা। আমরা শঙ্কিত দেশের অবস্থা নিয়ে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের সমস্যা সব সমস্যা নিজেরা সমাধান করেছে। ৬৯-এ গণঅভ্যুত্থান, ৯০-এর গণঅভ্যুত্থান, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ আমরাই করেছি। যারা মানুষের ন্যায্য আন্দোলন সমর্থন করতে চায় আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই। আর কেউ বিরোধিতা করলে তার নিন্দা জানাই।

/এনএইচ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়