ঢাকার ফুটপাত : এই খালি এই ভরা!
নিজস্ব প্রতিবেদক : উচ্ছেদ কর্মকর্তারা এলেই খালি, আবার চলে গেলেই ফুটপাতে বসা- রাজধানীতে হকার উচ্ছেদ নিয়ে এভাবেই চলছে প্রতিদিনের চিত্র। সোমবার সরেজমিনে গিয়েও এমন চিত্র দেখা গেছে। সিটি করপোরেশন ঘোষণা দিয়ে সকালে তাদের উচ্ছেদ করলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আবারো ফুটপাথ এবং রাস্তাঘাট দখল হয়ে যায়।
এ বিষয়ে মতিঝিলে অবস্থানরত বেসরকারি একটি ব্যাংকে কর্মরত সাবরিনা আক্তার বলেন, ‘আমার বাসা সেগুনবাগিচায় হওয়াতে আমি বেশিরভাগ সময়ে সকালে হেঁটে অফিস করতে আসি এবং হেঁটে বাসায় ফিরি। কিন্তু পল্টন, বায়তুল মোকাররমের সামনে থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত ফুটপাতে হকারদের কারণে হেঁটে আসতে খুবই কষ্ট হতো। মূলত ফুটপাত থাকাতে হাঁটাই যেত না। বাধ্য হয়ে রাস্তা থেকে হাঁটতে হত। কিন্তু অভিযানের কারণে এখন ফুটপাত একদম খালি, শান্তিতে হেঁটে আসতে পারছি।
পথচারী সৌমিক রহমান বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘আগের থেকে ফুটপাত এখন অনেকটাই দখলমুক্ত, কিন্তু পুরোপুরি না। একটু স্বস্তি পাচ্ছি আমরা।’
সন্ধ্যা ৬টার আগে ফুটপাতে বসা নিষেধ থাকলেও এখনও বেশিরভাগ জায়গায় সকাল বা দুপুরের পর থেকেই হকাররা বসছেন। সিটি করপোরেশনের হকার উচ্ছেদকারীরা যখন আসে, তারা সরে যায় আবার তারা চলে গেলেই বসে ফুটপাতে। আর তাদের সহযোগিতা করছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী। তারা লাইম্যানের মাধ্যমে হকারদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের ফুটপাতে বসার সুযোগ করে দিচ্ছে।
দিলকুশায় ঝুড়িতে নিয়ে কাপড় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ী লোকমান। তিনি বলেন, ‘মার্কেটে দোকান নিয়ে বসার মতো ক্ষমতা নেই। উচ্ছেদ করা হবে জেনেও ফুটপাতে দোকান নিয়ে বসেছি। মাস গেলে বাসা ভাড়া, সন্তানের স্কুল খরচ দিতে হবে।’
নিষেধ করার পরেও কেন এখানে বসেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আগে পুনর্বাসন করুক তারপর আর বসব না। এটা না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানেই বসবো।’
এদিকে ডিএনসিসির মেয়র সাঈদ খোকন এক সভায় জানিয়েছিলেন, হকারদের পুনর্বাসনে সিটি করপোরেশন সহায়তা করবে। কেউ বিদেশ যেতে চাইলে সিটি করপোরেশনে আবেদন করতে হবে। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদেশ যাওয়ার জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে সহায়তা করবে সিটি করপোরেশন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ মার্চ ২০১৭/নাসির/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন