চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আলো ছড়ানোর অপেক্ষায় যে অলরাউন্ডাররা
বেন স্টোকস, ক্রিস মরিস, সাকিব আল হাসান, কোরি অ্যান্ডারসন ও হার্দিক পান্ডিয়া
মো. নুরুল আমিন : অপেক্ষার প্রহর প্রায় শেষ। দরজায় কড়া নাড়ছে আরো একটি বড় ক্রিকেট আসর, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি-২০১৭। বলা হয়ে থাকে এটি সেরাদের বিশ্বকাপ। আক্ষরিক অর্থেও কিন্তু তাই। র্যা ঙ্কিংয়ের সেরা ৮ দলকে নিয়ে আগামী ১ জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্ট আয়োজনে প্রস্তুত ইংল্যান্ড ও ওয়েলস।
যেকোন ফরম্যাটের ক্রিকেটে যেকোন দলের জন্যই অন্যতম ভরসার নাম অলরাউন্ডার। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হলে তো কথাই নেই। দলের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে উঠেন এই অলরাউন্ডাররা। ১৯৯৩ বিশ্বকাপের কপিল দেব, ১৯৯২ এর ইমরান খান কিংবা ২০১১ এর যুবরাজ সিং এর নৈপুণ্যও দিচ্ছে সেই সাক্ষ্যই।
আবারো যখন আরেকটি বড় মঞ্চে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত দলগুলো তখন ঘুরেফিরে আলোচনায় চলে আসছে অলরাউন্ডারদের কথা। এরই মধ্যে সবকয়টি দল বেশ কিছু কার্যকর অলরাউন্ডার দিয়ে তাদের স্কোয়াড সাজিয়েছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক তাদের মধ্যে কারা থাকবেন কোটি ক্রিকেট ভক্ত কিংবা মিডিয়ার নজরে, সবচেয়ে বেশি আলো-ই বা ছড়াতে পারেন কারা।
১. বেন স্টোকস :
আইপিএল এ অভিষেক মৌসুমেই সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় হয়ে চমকে দিয়েছিলেন ক্রিকেট বিশ্বকে। পুনের ক্রিকেট কর্তাদের এই আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। একটি ম্যাচজয়ী অসাধারন সেঞ্চুরিসহ ৩১৬ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ১২ উইকেট। সদ্য সমাপ্ত ইংল্যান্ড- দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজেও হাঁকিয়েছেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। তাছাড়া গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংল্যান্ড ট্রাজেডির নায়ক স্টোকস নিশ্চয়ই মুখিয়ে আছেন সে দুঃখ ভুলে বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণকরতে।
২. ক্রিস মরিস :
দলে এখন পর্যন্ত নিয়মিত নন, অলরাউন্ডার খ্যাতিটাও এখনো পুরোপুরি নামের পাশে বসাতে পারেননি। তবে সুযোগ পেলেই ব্যাট কিংবা বল হাতে নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন ক্রিস মরিস। জাতীয় দল কিংবা আইপিএল সবজায়গাতেই তার ১৪০ কিলোমিটার এর বেশি গতির বোলিং বেশ কার্যকর, বিশেষ করে ডেথ ওভারে। সাথে ব্যাট হাতে সুযোগ পেলেই অবতীর্ন হন ঝড়ের অবতার রূপে। আইপিএল এর এবারের আসরে ১৬৩ স্ট্রাইক রেট তারই প্রমাণ। ফিনিশার হিসেবেও যে কোন অংশেই কম নন তার প্রমাণ ও দিয়েছেন ইংল্যান্ড এর বিপক্ষে গত বছর ৬২ রানের ইনিংস খেলে প্রায় একাই দলকে জিতিয়ে। তাই চোকার্স উপাধি ঘুচিয়ে বড় আসরে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে দক্ষিণ আফ্রিকার বড় অস্ত্র হতে পারেন ক্রিস মরিস।
৩. সাকিব আল হাসান :
‘টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটেই আইসিসির ১ নম্বর অলরাউন্ডার’ এই একটি পরিসংখ্যানই যথেষ্ট সাকিব আল হাসান বল কিংবা ব্যাট হাতে কতটা সামর্থ্যবান তার প্রমাণ দিতে। সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত খেলা উপহার দেওয়া বাংলাদেশ দলের সাফল্যের অন্যতম কারিগর সাকিব আল হাসান। দেশের হয়ে সব ফরম্যাটেই সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। রান সংগ্রহের তালিকায় ও আছেন প্রথম সারিতেই। টুর্নামেন্টের ৮ দলের মধ্যে অপেক্ষাকৃত দুর্বল হিসেবে বিবেচিত বাংলাদেশকে তাই অপরিচিত কন্ডিশনে অসাধারণ কিছু করতে সাকিব আল হাসানের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে অনেকাংশে
৪. কোরি অ্যান্ডারসন :
ক্যারিয়ারের শুরুতেই ৩৬ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে শহীদ আফ্রিদির প্রায় ২০ বছর পুরনো রেকর্ড ভেঙ্গে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন সবাইকে। এর পর সেভাবে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে না পারলেও সময়ে সময়ে প্রতিপক্ষ বোলারদের জন্য মুর্তিমান আতংক রূপে তাকে দেখা গেছে অনেকবারই। এক মৌসুমের বিস্ময় যে নন সেটির প্রমাণও দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। ইনজুরি কাটিয়ে যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে দলে ফিরেছেন। ১৭ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়ে দেশকে কিছু উপহার দিতে কিউইদের বড় ভরসা হতে পারেন কোরি অ্যান্ডারসন।
৫. হার্দিক পান্ডিয়া :
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলাটা খুব বেশিদিনের না হলেও আইপিএল কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ পরিচিত নাম হার্দিক পান্ডিয়া। আইপিএল দিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে উত্থান হওয়া এই ক্রিকেটার বেশি পরিচিত তার আগ্রাসী ব্যাটিং এর জন্য। আইপিএলে তার স্ট্রাইক রেট ২০০ এর ও উপরে! পাশাপাশি বল হাতেও বেশ মিতব্যয়ী গুজরাটে জন্ম নেওয়া এই ক্রিকেটার। গত বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রায় হেরে যাওয়া এক ম্যাচে ভারতকে জিতিয়েছিলেন শেষ ওভারে অসাধারণ বোলিং করে। শিরোপা ধরে রাখতে ভারতও নিশ্চয়ই খুব করে চাইবে অব্যাহত থাকুক তার এই ফর্ম।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ মে ২০১৭/মো. নুরুল আমিন/আমিনুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন