ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ফরহাদের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে রোমাঞ্চকর ম্যাচ জিতল দোলেশ্বর

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ১ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ফরহাদের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে রোমাঞ্চকর ম্যাচ জিতল দোলেশ্বর

ক্রীড়া প্রতিবেদক : উইকেট ভেজা থাকায় মিরপুরে শেখ জামাল ও প্রাইম দোলেশ্বরের ম্যাচ নেমে এসেছিল ২৬ ওভারে। বড় দুই দলের ম্যাচের উত্তেজনা অনেকটাই কমে যায় সেখানে! নাহ, তেমন হতে দেননি ক্রিকেটাররা। ২৬ ওভারের লড়াইও যে এতটা উত্তেজনার বারুদ ছড়াবে, তা কল্পনা করতে পারেনি কেউ।

আগের রাতে হওয়া বৃষ্টিতে উইকেট ভেজা থাকায় সোমবার দুপুর সোয়া একটায় মূল উইকেটের পাশের উইকেটে খেলা পরিচালনা করেন আম্পায়াররা। শেখ জামাল টস জিতে ব্যাটিংয়ে পাঠায় প্রাইম দোলেশ্বরকে। আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে দোলেশ্বর ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৩৯ রান। ব্যাটিংয়ে কড়া জবাব দেয় শেখ জামালও। কিন্তু ১ রানের হারের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদেরকে। ৯ উইকেটে ২৩৮ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। শেষ রোমাঞ্চে ম্যাচ জেতে প্রাইম দোলেশ্বর।

কিন্তু শেষটাতে দোলেশ্বরের জয়ে জড়িয়ে যায় বিতর্ক! শেষ বলে জয়ের জন্য শেখ জামালের দরকার ছিল ৬ রান। নতুন ব্যাটসম্যান খালেদ আহমেদকে ফরহাদ রেজা দিলেন ফুলটস। ব্যাটের কানায় লেগে থার্ডম্যান অঞ্চল দিয়ে বল গেল বাউন্ডারিতে। ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটসম্যান ‘নো’ বলের আবেদন করলেন ঠিকই। কিন্তু লেগ আম্পায়ার মাহফুজুর রহমান ও মূল আম্পায়ার মাসুদুর রহমানের থেকে কোনো সাড়া পাননি তারা।

আম্পায়াররা নিশ্চিত ছিলেন বল ‘নো’ ছিল না। তবুও রিভিউ করতে ম্যাচ শেষে চলে গেলেন ভিডিও রুমে। ভিডিও দেখে জানালেন, ‘নিজেরা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ভিডিও দেখলাম। এখন আরো নিশ্চিতভাবে বলা যাবে যে বল কোমরের নিচে ছিল।’



ম্যাচটি ছিল ফরহাদ রেজাময়। ব্যাটিংয়ে ১৮ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানের দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন। ১৯ বলে তার ৫৬ রানের ইনিংস থামান তাইজুল ইসলাম। ৬ ছক্কা ও ৩ চারে সাজান বিস্ফোরক ইনিংসটি।

তবে শুরুর দিকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন ইমরানুজ্জামান ও সাইফ হাসান। দুজন ১২.৩ ওভারে করেন ৯৭ রান। সাইফ ৪০ বলে ৩৬ রান করে বিদায় নিলেও ইমরানুজ্জামান ৫৪ বলে করেন ৭৫ রান। ৬ চার ও ৪ ছক্কা হাঁকান তিনি। তিনে নামা সাদ নাসিমের ব্যাট থেকে আসে ৩৬ বলে ৫১ রান। শেষ দিকে ফরহাদ রেজার ঝড়ে রানের ‘পাহাড়’ গড়ে প্রাইম দোলেশ্বর।

শেখ জামালের বোলাররা ছিলেন বেহিসেবি। খালেদ ৫ ওভারে ব্যয় করেন ৬৫ রান। তাইজুল ৫ ওভারে দেন ৫০। সালাউদ্দিন শাকিল ৬ ওভারে ৪০ রানে নেন ৩ উইকেট।

লক্ষ্য তাড়ায় শেখ জামালের শুরুটা ভালো ছিল না। ফারদীন (৫)  ও নাসির হোসেন (৯) দ্রুত সাজঘরে ফেরেন। ইমতিয়াজ হোসেন ও অনুসতুপ মজুমদারের ব্যাটে প্রতিরোধ পায় ধানমন্ডির দলটি। ইমতিয়াজ ৩৪, অনুসতুপ ৪৪ রান করে।



মাঠে নেমে শেখ জামালকে লড়াইয়ে ফেরান কাজী নুরুল হাসান সোহান। ২০ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩৭ রান করেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। তাকে সঙ্গ দেন জিয়াউর রহমান। ২১ বলে ৪ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। কিন্তু এ দুই ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরলে ব্যাকফুটে চলে যায় শেখ জামাল। তবুও তানভীর হায়দারের ব্যাটে লড়াই করেছিল দলটি।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১১ রান দরকার ছিল শেখ জামালের। ফরহাদের প্রথম বল ডটের পর দ্বিতীয় বলে মিড উইকেট দিয়ে চার মেরেছিলেন তানভীর। কিন্তু তৃতীয় বলে আবার ডট। চতুর্থ বল লং অন দিয়ে উড়াতে গিয়ে মাহমুদুল হাসান লিমনের অসাধারণ ক্যাচে পরিণত হন তানভীর। ২৫ বলে ৩৬ রান করেন তিনি। এরপর আর পারেনি শেখ জামাল। শেষ বলে চার হাঁকালেও জয়ের জন্য দরকার ছিল ছয় রান।

ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের পর বল হাতে ৬ ওভারে ৩৫ রানে ৩ উইকেট নেন ফরহাদ রেজা। আবু জায়েদ রাহী ৪৮ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরা দোলেশ্বরের অধিনায়ক ফরহাদ রেজা।

ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে অষ্টম রাউন্ড শেষে এটি প্রাইম দোলেশ্বরের ষষ্ঠ জয়। অন্যদিকে শেখ জামালের এটি চতুর্থ হার।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ এপ্রিল ২০১৯/ইয়াসিন/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়