ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

আজ মাগুরা মুক্ত দিবস

আনোয়ার হোসেন শাহীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ৭ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আজ মাগুরা মুক্ত দিবস

শহরের নোমানি ময়দায়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ

মাগুরা প্রতিনিধি :  আজ ৭ ডিসেম্বর, মাগুরা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মাগুরা পাক হানাদারমুক্ত হয়।

 

২ মার্চ শহরের চৌরঙ্গীর মোড়ে তৎকালীন মহাকুমা প্রশাসক ওয়ালিউর ইসলাম বিপ্লবী বক্তব্য রাখেন। তার বক্তব্য মাগুরার মানুষের মাঝে ব্যাপক অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে। তাৎক্ষণিকভাবে  মুন্সি রেজাউল হককে মাগুরা মহাকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি করে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে দুটি পরিষদ গঠনের পর থেকে তারা ঢাকার ঘোষণা অনুযায়ী মাগুরাতে ব্যাপক আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করে।

 

৩ মার্চ মাগুরায় সফল হরতাল পালন করে। সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান  তার অন্যতম দুই উপদেষ্টা সৈয়দ আতর আলী ও সোহরাব হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে ২৫ মার্চ পর্যন্ত অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।

 

অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন গেরিলা তৎপরতা চালাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন আলতাফ হোসেন,আবুল খায়ের, চেয়ারম্যান আকবর হোসেন, নবুয়ত মোল্যা, রোস্তম আলী, আবু নাসের বাবলু, নন্দ দুলাল বংশি প্রমুখ।

 

এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সারাদেশে হত্যাযজ্ঞ শুরু করলেও সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ ২৬ মার্চ মাগুরার প্রবেশপথ গুলোতে নানারকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির মাধ্যমে এক কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

 

পাশাপাশি তারা প্রয়োজনীয় অর্থ,অস্ত্র এবং সদস্য সংগ্রহ করতে থাকে। ২৬ মার্চ চুয়াডাঙ্গা ইপিআর এর ৪নং উইং কমান্ডার মেজর ওসমান বিদ্রোহ ঘোষণা করে এক প্লাটুন সদস্য ও অস্ত্রসহ মাগুরার সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে যোগ দেন।  

 

এদিকে হানাদার বাহিনী শহরের পিটিআই, ভিটিআই, সিও অফিস (বর্তমান উপজেলা পরিষদ চত্বর), মাগুরা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, নিউ কোর্ট বিল্ডিং, মাইক্রো ওয়েভ স্টেশন ও মাগুরা সরকারি কলেজে তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে।

 

শহরের মধুমতি ডাকবাংলোটিকে তারা হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহার করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। পাক বাহিনী স্থানীয় স্বাধীনতা বিরোধীদের চিহ্নিত করে শান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠন করে তাদের যোগসাজোশে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে।

 

মাগুরা শ্রীপুরের আকবর বাহিনী, মহম্মদপুরের ইয়াকুব বাহিনী, মহম্মদপুর ফরিদপুর অঞ্চলের মাশরুরুল হক সিদ্দিকী কমল বাহিনী, মাগুরা শহরের খন্দকার মাজেদ বাহিনী এবং মুজিব বাহিনীর তুমুল প্রতিরোধে পাক বাহিনী পিছু হটতে শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ও বিভিন্ন পাকিস্তানি ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়। একই সঙ্গে মিত্রবাহিনীর ভয়ে পাকিস্তানি সেনারা রাতে মাগুরা শহর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। পরদিন ৭ ডিসেম্বর মাগুরা শত্রুমুক্ত হয়।

 

মাগুরা মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে মাগুরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলার বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

 

 

রাইজিংবিডি/মাগুরা/৭ ডিসেম্বর ২০১৬/আনোয়ার হোসেন শাহীন/উজ্জল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়