ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়া সেই আনিসুর গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫১, ১ মে ২০২৪  
কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়া সেই আনিসুর গ্রেপ্তার

মো. আনিসুর রহমান

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা ও আশপাশের এলাকা থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়া বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দেশ ত্যাগ করার সময় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। 

কুমারখালী থানার উপ-পরিদর্শক মো. মারুফ হাসান জানিয়েছেন, পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ও কুমারখালী থানার ওসির নির্দেশনায় তথ্য-উপাত্ত ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ইমিগ্রেশন পুলিশ বিমানবন্দর থেকে আনিসুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। সেখানে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে কুমারখালীতে আনা হবে। মো. আনিসুর রহমান কুমারখালীর নন্দলালপুর ইউনিয়নের সদরপুর গ্রামের মৃত ইব্রাহিম বিশ্বাসের ছেলে। 

নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান খোকন বলেছেন, পাঁচ-সাত বছর ধরে আলাউদ্দিন নগরে প্রধান শাখা খুলে এনজিও ব্যবসা চালিয়ে আসছিল বিশ্বাস ফাউন্ডেশন এবং বিশ্বাস সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতি লিমিটেড। আমি জানতাম, বৈধভাবে চলছে সমিতির কার্যক্রম। কিন্তু, সম্প্রতি কয়েক শত গ্রাহক ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ জানালে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ওই এনজিওর কার্যক্রম অবৈধ। এর পর থেকেই গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাইয়ে দেওয়ার জন্য আমি চেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু, কয়েক মাস ধরে উধাও সমিতির চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আদালতে অনেক গ্রাহক মামলা করেছেন। 

তিনি আরো বলেন, প্রতারণা করে ওই ফাউন্ডেশন শুধু কুমারখালী উপজেলা থেকেই অর্ধশত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সারা বাংলাদেশেই বিভিন্ন নামে এনজিও খুলেছে প্রতিষ্ঠানটি। 

এ বিষয়ে কয়া ইউনিয়নের পুটিয়া এলাকার গৃহিনী জেসমিন খাতুন বলেন, বিশ্বাস ফাউন্ডেশনে তিনি ৭ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করেছিলেন। আরো ৫০ হাজার টাকা সঞ্চয় রাখা ছিল। সব নিয়ে চেয়ারম্যান আনিস পালিয়েছে। হাজার হাজার মানুষের টাকা নিয়ে পালিয়েছে এনজিওটি। 

কালোয়া গ্রামের ভুক্তভোগী রূপালী খাতুন বলেন, ২০১৭ সালে ৫০ হাজার টাকা ডিপিএস খুলেছি এককালীন। আমার মতো কয়েক শত মানুষ ডিপিএস খুলেছে। সবার টাকা নিয়ে পালিয়েছে বিশ্বাস ফাউন্ডেশন। 

কুমারখালী পৌর বাস টার্মিনাল এলাকার হামিদুর রহমান মঞ্জু জানান, তার ৭ লাখসহ কোটি কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছিল আনিসুর রহমান। 

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা জহুরা খানম বলেন, বিশ্বাস সমবায় সমিতির নামে নিবন্ধন আছে, কিন্তু ফাউন্ডেশনের কোনো নিবন্ধন নেই। বিশ্বাসের নামে নানা অভিযোগ থাকায় সমবায় কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠানে অডিট করে না। বিশ্বাস ফাউন্ডেশন মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে। 

কুমারখালী থানার ওসি মো. আকিবুল ইসলাম জানান, আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের আদালতে দায়ের করা তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। দেশত্যাগের সময় বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করেছে। আসামিকে কুমারখালীতে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

কাঞ্চন/রফিক 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়