নির্বাচিত হয়ে প্রথম দায়িত্ব হবে দুর্নীতি ও অনৈতিক সুবিধা বন্ধ করা: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “আগামী দিনের বাংলাদেশের প্রধান প্রত্যাশা হতে হবে একটি দুর্নীতিমুক্ত ও সুশাসনভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা।”
তিনি বলেন, “শক্তিশালী সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং অনিয়ম ও অনায্য সুবিধা গ্রহণের সংস্কৃতির লাগাম টানতে হবে।”
রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীতে পেশাজীবী পরিষদের আয়োজনে ‘আসন্ন সংসদ নির্বাচন ও জনপ্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ভার্চুুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, “আমরা যেন একটি ভালো শুরু করতে পারি— সেই লক্ষ্যেই আগামী নির্বাচনকে গুরুত্ব দিতে হবে। যারা নির্বাচনে জয়ী হবে, তাদের প্রথম দায়িত্ব হবে রুল অব ল নিশ্চিত করা। দুর্নীতি ও অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার প্রবণতা বন্ধ না হলে রাষ্ট্র কাঠামো দুর্বলই থেকে যাবে।”
রাজনীতিতে জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে রাজনীতি করলে জনগণের প্রকৃত সমস্যা বোঝা যায় না। যানজট, দ্রব্যমূল্য, কর্মসংস্থান— এই সমস্যাগুলোকে মানুষ যেন স্বাভাবিক বলে মেনে না নেয়, সে জন্য আমাদের ভাবতে হবে। পরিস্থিতির উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “বিএনপি কখনো শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে রাজনীতি করেনি। গত ১৫ বছর ধরে দলটির নেতাকর্মীরা নির্যাতন, মামলা ও দমন-পীড়নের মধ্য দিয়েই রাজনীতি করে আসছে।”
তিনি বলেন, জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে বিএনপি সব সময় রাজপথে ছিল এবং থাকবে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক মাহবুবুল্লাহ বলেন, “হাদির ওপর যে হামলা হয়েছে, তা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়; বরং এটি একটি পরিকল্পিত গুপ্ত আক্রমণ। যদি আমরা এর বিরুদ্ধে গণজাগরণ ও জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আরো ভয়াবহ বার্তা দেবে।”
তিনি বলেন, “দেশে এখন ক্ষমতার ভারসাম্য নেই— কিছু মানুষ অতিমাত্রায় ক্ষমতাবান, আর সাধারণ মানুষ ক্ষমতাহীন। এই বৈষম্য দূর না হলে সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।”
“শুধু এসি কক্ষে আলোচনা করে কোনো রাজনৈতিক দলের জনপ্রিয়তা অর্জন সম্ভব নয়। জনপ্রিয় হতে হলে ঘরে ঘরে যেতে হবে, মানুষের কষ্ট শুনতে হবে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি না হলে সব উদ্যোগই ব্যর্থ হয়ে যাবে।”
অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন বলেন, “নির্বাচনকালীন সরকার প্রয়োজন কেন— এর মূল কারণ হলো জনগণের হাতে প্রকৃত ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া। গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে হলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনি ব্যবস্থার বিকল্প নেই।”
নাগরিক ঐক্যের নেতা ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, “বর্তমানে একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে দুর্বল সরকার তৈরির চেষ্টা করছে। সেই প্রচেষ্টার লক্ষণ আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি, যা দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগজনক।”
আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমানসহ পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/আলী/রাসেল