টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজের যাত্রা
শাহরিয়ার সিফাত || রাইজিংবিডি.কম
নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে টাঙ্গাইলবাসীর বহু প্রতীক্ষিত টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মেডিক্যাল কলেজের উদ্বোধন করেন তিনি।
এসময় প্রধানমন্ত্রী টাঙ্গাইল ছাড়াও জামালপুর, পটুয়াখালী, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও রাঙ্গামাটিতে নবনির্মিত ৫টি মেডিক্যাল কলেজ ও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রংপুর, বগুড়া, যশোর, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে প্রতিষ্ঠিত ৫টি আর্মি মেডিক্যাল কলেজ উদ্বোধন করেন।
এ উপলক্ষ্যে সকালে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপির সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের প্রশাসক ফজলুর রহমান খান ফারুক, আবদুল বাতেন এমপি, একাব্বর হোসেন এমপি, মো: ছানোয়ার হোসেন এমপি, মনোয়ারা বেগম এমপি ও হাজেরা সুলতানা এমপি, জেলা প্রশাসক মাহবুব হোসেন, পুলিশ সুপার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। উদ্বোধনের পর শহরে একটি র্যালী বের হয়। পরে মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উৎসব পালন করা হয়।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অব্যবহৃত ট্রমা সেন্টার ভবনটি আপাতত মেডিক্যাল কলেজের জন্য ব্যবহার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গতবছর ২৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ প্রশাসনিক অনুমোদন লাভ করে। এরপর পাবনা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী খানকে টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়। মোহাম্মদ আলী খান গত ১৯ জুন টাঙ্গাইলে যোগদান করেন। গত ৭ আগস্ট জেনারেল হাসপাতাল ক্যাম্পাসে নির্মিত ট্রমা সেন্টারটি মেডিক্যাল কলেজের কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়।
অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী খান জানান, মেডিক্যাল কলেজের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ২৫ দশমিক ২ একর এবং জেনারেল হাসপাতালের পেছনে ৪ দশমিক ৫ একর জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কলেজের বিভিন্ন বিভাগের সাত জন প্রভাষক এবং একজন কনসালটেন্ট (গাইনি) যোগদান করেছেন। এছাড়াও সচিব, হিসাবরক্ষকসহ চারজন কর্মীকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারি অধ্যাপক পদে কোন পদায়ন হয়নি। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এনাটমি, ফিজিওলজি ও বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক, সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপক পদায়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে অবস্থিত মেডিক্যাল এসিসট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাট্স) অধ্যক্ষের বাসভবন এবং জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের বাসভবন ছাত্রদের জন্য এবং জুনিয়র প্রভাষকের বাসভবন ছাত্রীদের হোস্টেল হিসেবে অস্থায়ীভাবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই বাসভবনগুলো ছাত্রাবাস হিসেবে গোছানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৪১ বছর প্রতীক্ষার পর টাঙ্গাইলবাসীর একটি মেডিক্যাল কলেজের স্বপ্ন পূরণ হলো। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ইতিমধ্যে ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত পরীক্ষার মাধ্যমে ৫১ জন শিক্ষার্থীকে টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে কলেজের প্রথম ব্যাচের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাশ শুরু হবে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ জানুয়ারি ২০১৪/শাহরিয়ার সিফাত/শাহনেওয়াজ
রাইজিংবিডি.কম