ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস: কী ভাবছেন ক্যাম্পাস গণমাধ্যমকর্মীরা

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩৭, ৩ মে ২০২৩   আপডেট: ২০:৫২, ৩ মে ২০২৩
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস: কী ভাবছেন ক্যাম্পাস গণমাধ্যমকর্মীরা

ফাহাদ বিন সাঈদ, আলমগীর হোসেন, আসলাম বেগ, তৈয়ব শাহনূর

আজ ৩ মে, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনের সুপারিশ অনুযায়ী- ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ৩ মে তারিখটিকে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

মুক্ত সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের দাবিতে প্রতিবছর এই দিনে বিশ্বজুড়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করে আসছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সকল প্রকার মানবাধিকারের চালিকাশক্তি’।দিবসটি নিয়ে কী ভাবছেন ক্যাম্পাস গণমাধ্যমকর্মীরা। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

‘গণমাধ্যমকর্মীদের সংবাদ সংগ্রহ থেমে থাকে না’
রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক জনগণ। তথ্য জানার অধিকার তাদের রয়েছে। আর তথ্য জানানোর দায়িত্বও রয়েছে। সেজন্য গণমাধ্যমকে সমাজের আয়না হিসেবে পরিগণিত করা হয়। আয়নায় যেমন নিজের অবয়ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে, গণমাধ্যমেও সমাজের প্রতিচ্ছবি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সেই ছবি ফুটিয়ে তোলার দায়িত্ব নেন গণমাধ্যমকর্মী। দেশে এখন শত শত পত্রিকা। জাতীয়, স্থানীয়, সাপ্তাহিক, মাসিক, পাক্ষিকসহ বিভিন্ন পত্রিকা, টেলিভিশন এবং অনলাইনে কাজ করা সারাদেশে ছড়িয়ে রয়েছেন কয়েক হাজার সাংবাদিক। পত্রিকায় কাজ করা প্রান্তিক পর্যায়ের সাংবাদিকদের পরিশ্রম করতে হয় ঠিকই কিন্তু তাদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কম। নেই বললেই চলে অনেক ক্ষেত্রে। সে তার দায়িত্ব পালন করে যায়। আর তখনই তাকে নানাভাবে নির্যাতিত হতে হয়। জেল-জরিমানা, হুমকি সহ্য করতে হয়। তারপরও গণমাধ্যমকর্মীদের সংবাদ সংগ্রহ থেমে থাকে না।
- ফাহাদ বিন সাঈদ, সভাপতি, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি
(ক্যাম্পাস প্রতিনিধি: আজকের পত্রিকা)

‘আসুন আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্যের অধিকার রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হই’
একবিংশ শতাব্দীতে তথ্য শুধু অধিকার নয়, এটি একটি সম্পদও বটে। তথ্যের অবাধ প্রবাহে গণমাধ্যমের গুরুত্ব অপরিসীম। তথ্য পরিবেশন, জ্ঞান বৃদ্ধি, সামাজিক চেতনা বিকাশ, শিক্ষার প্রতি আগ্রহ তৈরি,পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা, মানসিক বিকাশ, নান্দনিক রুচি বিকাশ, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি বিকাশসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
গণমাধ্যম সত্যের ধারক ও বাহক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশন করে থাকেন।গণমাধ্যম সমাজ ও রাষ্ট্রের ভালো মন্দ তুলে ধরে যেমন সমালোচনা ও জবাবদিহিতার পরিবেশ তৈরি করে, ঠিক তেমন ইতিহাস, ঐতিহ্যও বিশ্বব্যাপী প্রকাশ ও প্রচার করে থাকেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের উচিত ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করা। বেশি পরিমাণ লাইক শেয়ারের জন্য গুজব না রটানো। গণমাধ্যমকর্মীদের উচিত হলুদ সাংবাদিকতা পরিহার করা।
জাতিসংঘের ১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে: ‘প্রত্যেকের মতামত ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে; এই অধিকারে হস্তক্ষেপ ছাড়াই মতামত রাখা এবং কোনো গণমাধ্যমের মাধ্যমে তথ্য ও ধারণাগুলো অনুসন্ধান করা, গ্রহণ এবং গ্রহণের স্বাধীনতার সীমানা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত।’ এছাড়াও সংবিধানের ৩৯ নং অনুচ্ছেদের ২(ক)তে সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। রাষ্ট্রের উচিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করা।গণমাধ্যমকে রাষ্টের ৪র্থ স্তম্ভ হিসেবে অভিহিত করা হয়। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে আসুন আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্যের অধিকার রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হই।
- আলমগীর হোসেন, দপ্তর সম্পাদক, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।
(ক্যাম্পাস প্রতিনিধি: দৈনিক নয়া শতাব্দী)

‘স্বাধীন গণমাধ্যম ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে সমাজের বাস্তব প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠুক’
গণমাধ্যম একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। একটি রাষ্ট্রের স্তম্ভ যত শক্ত ভিত পাবে, সে রাষ্ট্রের সমগ্র কাঠামো তত শক্তিশালী হবে। সে হিসেবে এই স্তম্ভটি হওয়া উচিৎ অত্যন্ত শক্তিশালী। রাষ্ট্রের এই স্তম্ভটি শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে স্বাধীন গণমাধ্যমের বিকল্প নেই। রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক জনগণ। তথ্য জানার অধিকার তাদের রয়েছে। আর তথ্য জানানোর দায়িত্বও রয়েছে। সেজন্য গণমাধ্যমকে সমাজের আয়না হিসেবে পরিগণিত করা হয়। আয়নায় যেমন নিজের অবয়ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে, গণমাধ্যমেও সমাজের প্রতিচ্ছবি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তবেই একটি দেশে গণমাধ্যমকে স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ বলা যেতে পারে। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, আজকাল মুক্ত গণমাধ্যম চর্চার সুযোগ নিয়ে মূলধারার বাইরের কিছু গণমাধ্যম সমাজে বিভ্রান্তিকর তথ্য এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য ছড়ায়। এটা সমাজের জন্য হীতকর নয় এবং গণমাধ্যমের কাজও এটা নয়। তাই গণমাধ্যম কর্মীদেরও উচিৎ নিজের ধর্ম-স্বাধীনতাকে ক্ষমতাকে দ্বায়িত্বে রূপান্তর করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশ করা।
- আসলাম বেগ, অর্থ সম্পাদক, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি
(ক্যাম্পাস প্রতিনিধি: শেয়ার বিজ)

‘গণমাধ্যম এখন নাগরিক জীবনের প্রায় প্রতিটি মুহূর্তের সঙ্গী’
প্রাচীনকাল থেকেই মানব সভ্যতাকে বিকশিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে যোগাযোগ বা তথ্য সরবরাহ। কালক্রমে এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। যাকে বলা হয় মিডিয়া বা গণমাধ্যম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নেহায়েত তথ্য সরবরাহ বা সংবাদ সম্প্রচার ছাড়াও আধুনিক বিশ্বব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে সংবাদ মাধ্যমগুলো। গণমাধ্যম এখন নাগরিক জীবনের প্রায় প্রতিটি মুহূর্তের সঙ্গী। স্যোশাল মিডিয়া আসার পর থেকে গণমাধ্যমের ধারণা আরো বিস্তৃত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেরও নির্ভরযোগ্য তথ্যের উৎস হিসেবে কাজ করছে মূলধারার মিডিয়ার পেজগুলো। এবং এসব মিডিয়া কার্যক্রম বেশ জনপ্রিয়তাও পাচ্ছে।
বর্তমান মিডিয়ার আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতি যা সামগ্রিক অর্থে পুরো বিশ্বকেই ছোট করে দিয়েছে। শত শত ভাষায় যেকোনো তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে। মানবসভ্যতার এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গণমাধ্যমকে তাই আরো বেশি শক্তিশালী এবং সার্বজনীন করা প্রয়োজন। দেশে দেশে রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক কিংবা ব্যবসায়িক অপব্যবহার থেকে বের হয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো সমাজ বিনির্মাণে অংশগ্রহণ করুক, বিশ্বব্যবস্থা চালনায় অবদান রাখুক, বিশ্ব গণমাধ্যম দিবসে এই প্রত্যাশা রইল।
- তৈয়ব শাহনূর, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।
(ক্যাম্পাস প্রতিনিধি: রাইজিং বিডি)

তৈয়ব শাহনূর/ফিরোজ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়