আ’লীগ নেতার বাসায় নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মীর মৃত্যু

শেরপুরের শ্রীবরদীতে আওয়ামী লীগ নেতা আহসান হাবিব শাকিলের বাসায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী মারা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) বন্দে আলী।

নির্যাতনের শিকার ১০ বছর বয়সী ওই শিশুর নাম সাদিয়া পারভিন। সে শহরের মুন্সীপাড়া এলাকার ট্রলিচালক সাইফুল ইসলামর মেয়ে। শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মত্যু হয়। 

শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) বন্দে আলী জানান, ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে নির্যাতনের সময় শিশু সাদিয়ার আত্মচিৎকার শুনে এক প্রতিবেশী ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশকে জানায়। পরে এসআই মোফাখ্খির হাসান রাত ১১টার দিকে আহসান হাবিব শাকিলের বাসা শহরের বিথি টাওয়ারের ৬ তলা থেকে সাদিয়াকে উদ্ধার করে উপজেলা সদর হাসপাতাল ভর্তি করেন। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরদিন তাকে জেলা সদর হাসপাতাল ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রায় এক মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই শিশুর মত্যু হয়। 

বন্দে আলী আরো জানান, নির্যাতনের অভিযোগে থানায় মামলা হয় এবং ২৫ সেপ্টেম্বর রাতেই ওই নেতার স্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুরকে আটক করা হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। শিশুটি মারা যাওয়ায় এ ব্যাপার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

মৃত শিশুর বাবা সাইফুল ইসলাম জানায়, দুই বছর আগে শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিলের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজে দিয়েছিলেন শিশু সাদিয়া পারভিনকে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, অনেকদিন ধরে ওই নেতার স্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুর নানা অজুহাতে সাদিয়ার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এমনকি খুন্তির ছ্যাকায় তার মাথায়, পিঠ ও কাধে গুরুতর জখম ও ক্ষত’র সৃষ্টি হয়। আমরা আগে জানতে পারিনি। কারণ, আমাদের কাছে মেয়েকে আসতে দিতেন না।

সাইফুল ইসলামে দুই ছেলে ও এক মেয়ে। এরমধ্যে অভাবের কারণেই শিশু সাদিয়াকে কাজে দিয়েছিলেন। নিজেও এক সময় কাজ করতেন ঐ আওয়ামী লীগ নেতা আহসান হাবিব শাকিলের বাবার বাসায়। সেই বিশ্বাস থেকেই কাজে দিয়েছিলেন তার মেয়েকে। 

তিনি আরো জানান, সাদিয়া ঐ আওয়ামী লীগ নেতা ও তার স্ত্রীকে বাবা-মা বলে ডাকতো। তারপরও তারা এভাবে মেয়ের উপর নির্যাতন করেছে। তিনি তার মেয়ে হত্যার বিচার চান।