ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

গাজীপুরে পরিবেশ দূষণ রোধে নাগরিক সংলাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৩, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩  
গাজীপুরে পরিবেশ দূষণ রোধে নাগরিক সংলাপ

গাজীপুরে পরিবেশ দূষণ থেকে উত্তরণে নাগরিক সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে গাজীপুরের পিটিআই অডিটোরিয়ামে এ সংলাপের আয়োজন করে বেলা ও নদী পরিব্রাজক দল।

বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহমুদ হাসান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই গাজীপুরের দখল-দূষণ নিয়ে বিশদ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভাওয়ালের বদরে আলম সরকারি কলেজের অধ্যাপক অসীম বিভাকর।

আরো পড়ুন:

বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা নদী রক্ষা কমিটির সদস্য অধ্যপক মুকুল কুমার মল্লিক, গাজীপুর জেলা সমাজসেবার উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেন, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মো. এজাজ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার শারমিন জাহান, বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন।

বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পরিবেশ নিয়ে আমরা যখন কথা বলি; তখন একদল শক্তিশালী মানুষের বিপক্ষে লড়তে হয়। তাই আমাদের সব শক্তি একসঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের ডকুমেন্টস সংগ্রহ করতে হবে, বনের সীমানা চিহ্নিত করতে হবে। তবেই আমরা আইনি পদক্ষেপ নিতে পারব৷ কারণ যারা দখলকারী তারা অত্যন্ত শক্তিশালী, সুতরাং তাদের সঙ্গে লড়তে হলে আমাদের সঠিক তথ্য লাগবে। ছোট ছোট ওয়ার্কিং গ্রুপের মাধ্যমে কাজ করতে পারি। এদের সঙ্গে উঠোন বৈঠক করে, প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজ করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহমুদ হাসান বলেন, বাংলাদেশে প্রতিদিন সবকিছুর পরেও একজন মানুষ থেকে  অন্তত ৫০০ গ্রাম বর্জ্য উৎপাদন হয়। তাহলে দিনে ১৬ কোটি জনগোষ্ঠীর বর্জ্য হচ্ছে প্রতিদিন  ৮ কোটি কেজি৷ আপনারা বন নিয়ে , পরিবেশ নিয়ে এবং দখল-দূষণ নিয়ে কথা বলেছেন। এগুলো কাজ পর্যায়ক্রমে করতে হবে।

এসময় তিনি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা কিছু তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে পারেন৷
গাজীপুর জেলা সমাজসেবার উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, যদি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করা যেতো তাহলে আরও ভালো হতো। সিটি কর্পোরেশন থেকে বড় বড় প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে কিন্তু সঠিক কাজটা হচ্ছে না। বর্জ্যগুলো একটি বালতিতে না ফেলে দুটো বালতিতে ফেলা হতো। একটিতে ময়লা, অন্যটিতে পচনশীল ময়লা রাখা যেতো, তাহলে ভালো হতো৷ এটি করতে হবে সিটি কর্পোরেশনকেই৷

রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিচার্স সেন্টারের চেয়ারম্যান মো. এজাজ বলেন, গাজীপুরের নদী ও দূষণকে বাদ দিয়ে কাজ করলে সফলতা আসবে না। গাজীপুরের ৩ টি নদী বাদ দিয়ে সব নদী দূষিত হয়ে গেছে। গাজীপুরের পানি সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ। আলোচনায় উঠে এসেছে সমস্যাগুলো। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছি কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কোন জায়গা বরাদ্দ হচ্ছে না। রাস্তা হচ্ছে, ব্রিজ হচ্ছে কিন্তু দূষণের বিষয়ে কাজ তেমন হচ্ছে না।

বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মকে নদী চিনতে হবে। নদী এবং পরিবেশ সম্পর্কে উন্নত এবং স্পষ্ট ধারণা, নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার, নদীর সুরক্ষা ও সংরক্ষণের নিয়ম জেনে সমাজের প্রয়োজনে তা কাজে লাগানো এবং সর্বোপরি নদীর সঙ্গে স্বাস্থ্যকর সহাবস্থানের ক্ষেত্রে আমাদের প্রয়োজনীয় অন্তর্দৃষ্টি গড়ে তোলার প্রচেষ্টা শৈশব থেকেই শুরু হওয়া উচিত।

এসময় উপস্থিত ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীর বক্তব্য ও মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন৷ তারা দখল দূষণের বিষয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করেন, প্রতিকারের কি ব্যবস্থা আছে, সেসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়। নদী, পরিবেশ ও বনভূমি দখল-দূষণের বিভিন্ন পয়েন্ট ও স্থান চিহ্নিত করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় গানছবি ফোক ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ও ভোকাল কবি মোস্তফা খান ও শিল্পীরা নদীর দখল-দূষণ ও নদীর কান্না নিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন৷ এসব শিল্পীরা নদী নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গান রচনা ও গেয়ে আসছেন।

রেজাউল/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়