ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

রাবিতে আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ পালন

রাবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৮, ২৭ অক্টোবর ২০২৫  
রাবিতে আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ পালন

‘কোনো মাত্রাই নিরাপদ নয়, সিসা দূষণ বন্ধে কাজ করার এখনই সময়’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পালিত হলো ‘আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ ২০২৫’।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৯টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এ উপলক্ষে ইউনিসেফের সহযোগিতায় ইয়ুথনেট গ্লোবাল ও পিওর আর্থ বাংলাদেশ যৌথভাবে জনসচেতনতামূলক র‍্যালি, মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আরো পড়ুন:

সিনেট ভবনের সামনে থেকে র‍্যালি শুরু হয়ে জোহা চত্বর প্রদক্ষিণ শেষে মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে সকাল ১১টায় তাদের এ কর্মসূচি শেষ হয়।

এতে অংশ নেন রাবির ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম, ইয়ুথনেট গ্লোবালের স্বেচ্ছাসেবক, পিওর আর্থ ও ইউনিসেফের প্রতিনিধি, পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ শতাধিক অংশগ্রহণকারী।

র‍্যালিতে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল সিসা দূষণ প্রতিরোধমূলক ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড। ‘সিসা দূষণ বন্ধ হলে, বাড়বে শিশু বুদ্ধি-বলে’সহ বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে সিসা বিষক্রিয়া রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, আইন প্রয়োগ ও সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

মানববন্ধন থেকে জানা যায়, সিসা দূষণে বিশ্বে বাংলাদেশ চতুর্থ। দেশের ৬০ শতাংশ শিশুর রক্তে অতিরিক্ত সিসা পাওয়া গেছে, যা বুদ্ধি ও মনোযোগ কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ দূষণে বছরে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু ও জিডিপির ৬–৯ শতাংশ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। দেয়াল রং, খেলনা, প্রসাধনী, মসলা ও অনিরাপদ ব্যাটারি রিসাইক্লিং সিসা দূষণের প্রধান উৎস।

পিওর আর্থ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিতালী দাশ বলেন, “আমাদের মাটি, পানি ও বায়ু সিসা দ্বারা দুষিত হচ্ছে। ভোগ্য পণ্যে সিসার মান নির্ধারণ, অবৈধ ব্যাটারি রিসাইক্লিং প্রতিরোধ এবং কঠোর আইন প্রয়োগ ছাড়া সিসা দূষণ রোধ সম্ভব নয়।”

ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান বলেন, “সিসা দূষণ শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ। যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করে সচেতনতা বাড়াতে পারলেই সিসামুক্ত, নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব।”

ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, “সিসা দূষণ প্রতিরোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতা বাড়াতে হবে।”

কর্মসূচির শেষে আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীরা সরকার ও নীতিনির্ধারকদের প্রতি দশ দফা দাবি জানান। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য— সিসাকে ‘বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য’ হিসেবে জাতীয়ভাবে তালিকাভুক্ত করা, জনগণের রক্তে সিসার মাত্রা নির্ধারণে জাতীয় জরিপ পরিচালনা, শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং ভোগ্যপণ্যে সিসার মান নিয়ন্ত্রণ ও কঠোর মনিটরিং নিশ্চিত করা।

জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আহ্বানে প্রতিবছর অক্টোবর মাসে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ‘আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ’।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়