ঢাকা     বুধবার   ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ৭ ১৪৩১

‘ফিলিস্তিনিদের কোনো ঈদ নেই, ঈদের পরিবেশও নেই’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১০, ১৭ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৫:১৬, ১৭ জুন ২০২৪
‘ফিলিস্তিনিদের কোনো ঈদ নেই, ঈদের পরিবেশও নেই’

গাজাবাসীর জীবন থেকে স্রেফ হারিয়ে গেল আরও একটি আনন্দের দিন। বিষাদের মধ্য দিয়ে অঞ্চলটির লাখো মানুষ রোববার (১৬ জুন) ঈদুল আজহার আনুষ্ঠানিকতা পালন করলেন মাত্র। আনন্দ তাদের ছুঁতে পারেনি। কারণ, ইসরায়েলি আগ্রাসন তাদের প্রায় প্রত্যেকের জীবন থেকে কোনো না কোনো প্রিয়জনকে কেড়ে নিয়েছে, বাড়িঘর ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে, খাবারের সংকট তৈরি করেছে। 

নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, টানা আট মাস ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা ও গণহত্যার মধ্য দিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের জন্য গত রোজার ঈদের মতো এবার কোরবানি ঈদের দিনটিতেও আনন্দের তেমন কোনো উপলক্ষ ছিল না। 

ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় গাজার বেশির ভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বহু মসজিদ। এতে বাড়িঘর ও মসজিদের ধ্বংসস্তূপের পাশেই নামাজ আদায় করতে হয় বাসিন্দাদের। ঈদের দিন হারানো স্বজনদের জন্য আহাজারি করতে দেখা গেছে অনেককে।

গাজার বাসিন্দারা আট মাস ধরে ক্ষুধার্ত ও দুর্ভিক্ষপীড়িত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। ইসরায়েলিরা এ অঞ্চলে ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রী প্রবেশে বড় ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। গাজা উপত্যকার ২৪ লাখ মানুষের বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।   

দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় বালুভর্তি একখণ্ড জমিতে তাঁবু খাটিয়ে বসবাস করছেন জাইনা কামুনি ও তার পরিবারের সদস্যরা। তিনি বলেন, ‘আমাদের (ফিলিস্তিনিদের) কোনো ঈদ নেই। ঈদের পরিবেশও নেই।’

'আমি গত পাঁচ মাসে কোনো মাংস খাইনি', বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এই দিনটি অন্য যেকোনো দিনের মতোই ছিল। ঈদুল ফিতরও এভাবেই গেছে।’

ইসরায়েলি হামলায় সম্প্রতি দক্ষিণ গাজার রাফা থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন মালাকিয়া সালমান (৫৭)।  আপাতত এই নারী তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের একটি তাঁবুতে বাস করছেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো আনন্দ নেই। আমাদের কাছ থেকে সব আনন্দ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।’

সালমান বলেন, ‘আমি আশা করব বিশ্ববাসী আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এই যুদ্ধ অবসানের জন্য চাপ দেবেন। কারণ আমরা প্রকৃত অর্থে মৃত্যুর কাছাকাছি রয়েছি এবং প্রতিনিয়তই আমাদের শিশুদের মনোবল ভেঙে পড়ছে।’

ঈদুল আজহার সবচেয়ে বড় অনুসর্গ কোরবানি হলেও অঞ্চলটির জনগণের কাছে পশু কেনার মতো কোনো অর্থ অবশিষ্ট নেই। তবে, যাদের সামর্থ ছিল এমনকি তারাও ইসরায়েলি বাধায় কোরবানি দিতে পারেনি।

গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, গাজার অনেকেই ঈদুল আজহায় কোরবানি দিতে পারেনি। সবগুলো সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়ে গাজায় কোরবানির পশু প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

/ফিরোজ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়