ঢাকা     বুধবার   ০৮ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩০, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ২১:৪৫, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী

মানবিক কারণে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিলেও এখন পর্যন্ত মিয়ানমার একজনকেও ফিরিয়ে না নেওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনে ভার্চুয়াল ভাষণে এ অনুরোধ জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ১১ লাখেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত মিয়ানমার নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে। তিন বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত মিয়ানমার একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি।

‘এই সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্টি এবং এর সমাধান মিয়ানমারকেই করতে হবে।  আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে আরও কার্যকর ভূমিকা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।’

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর বিদ্যমান সমস্যা প্রতিনিয়ত প্রকট হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সংকটকালেও আমাদের বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করতে হচ্ছে।  সিভিএফ ও ভি-২০ গ্রপি অফ মিনিস্টার অব ফিন্যান্স-এর সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু সমস্যা উত্তরণে একটি টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়নে নেতৃত্ব প্রদান করবে।  এছাড়াও গ্লাসগো কনফারেন্স অব পার্টিজ-এ গঠনমূলক ও কার্যকর ফলাফল নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।’

বাংলাদেশে লিঙ্গ বৈষম্য সামগ্রিকভাবে ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ কমিয়ে আনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় উন্নয়নের মূলে রয়েছে নারীদের অবদান।  মহামারি মোকাবিলাসহ সব কার্যক্রমে বাংলাদেশের নারীরা সামনে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন।’

এ সময় শিশুদের উন্নয়নে বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়নের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইউনিসেফ-এর এক্সিকিউটিভ বোর্ডের বর্তমান সভাপতি হিসেবে আমরা শিশুর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করে যাচ্ছি। তাছাড়া, কোভিড সংক্রান্ত সমস্যা যাতে শিশুদের সামগ্রিক সমস্যায় পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।’

মহামারিকালে অসহিষ্ণুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ ও উগ্র জাতীয়তাবাদের মতো  বিষয়গুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শান্তির সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা এ বিষয়গুলোর মোকাবিলা করতে পারি।’

শান্তিরক্ষী প্রেরণে বাংলাদেশের অবস্থান এখন শীর্ষে-এ কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংঘাতপ্রবণ দেশসমূহে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও শান্তি বজায় রাখতে আমাদের শান্তিরক্ষীগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অন্যতম দায়িত্ব।’

সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামে বাঙালি জাতি অবর্ণনীয় দুর্দশা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার মতো জঘন্য অপরাধের শিকার হয়েছে।  সেই কষ্টকর অভিজ্ঞতা থেকেই আমরা নিপীড়িত ফিলিস্তিনী জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি সমর্থন দিয়ে আসছি।’

গত ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে শুরু হয়েছে।  এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘আমরা ভবিষ্যৎ চাই, জাতিসংঘ আমাদের প্রয়োজন: বহুমুখীতার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্নিশ্চিতের মাধ্যমে।’

বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর কারণে জাতিসংঘের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম বিশ্ব নেতারা বিশ্বের সর্বোচ্চ ফোরাম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভার্চুয়াল অধিবেশনে অংশ নিচ্ছেন।

পারভেজ/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ