ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বছরের মাঝামাঝি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর প্রতিশ্রুতি মিয়ানমারের

কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২৮, ১৯ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ২১:৫৪, ১৯ জানুয়ারি ২০২১
বছরের মাঝামাঝি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর প্রতিশ্রুতি মিয়ানমারের

চলতি বছরের মাঝামাঝিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিয়ানমার। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রথম তিন মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে তারা এই মনোভাব জানায়।

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে চীনের মধ্যস্ততায় মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এ আলোচনা হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে মঙ্গলবারের এই ভার্চুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার লুও ঝাওহুই ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব হাও দো সোয়ান।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, বছরের প্রথম তিন মাসে আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছি। তবে মিয়ানমার বছরের মাঝামাঝিতে নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দেয়। ১ এপ্রিল থেকে তাদের জাতীয় সংসদে সভা থাকার কারণে এই সময় নিয়েছে তারা।

এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ঠিক কী প্রক্রিয়ায় প্রত্যাবাসন শুরু হবে- তা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বৈঠকে চীনের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে যেসব রোহিঙ্গা যাবে তাদের চীনের পক্ষ থেকে করোনার টিকা দেওয়া হবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ায় এবার চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় এই বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়। রাখাইনে গ্রামভিত্তিক রোহিঙ্গাদের পাঠানোর জন্য বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেখানে সব এলাকার রোহিঙ্গাদের না পাঠিয়ে, ধীরে ধীরে গ্রামভিত্তিক রোহিঙ্গাদের পাঠানোর উদ্যোগ নিলে সেটা প্রকৃতপক্ষে সুফল বয়ে আনবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, রোহিঙ্গা ইস্যুটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দ্বিপক্ষীয় বিষয় বলে মন্তব্য করেছে চীন। বৈঠক শেষে চীনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এসব জানানো হয়েছে।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বন্ধুত্বপূর্ণ, স্বচ্ছ ও গঠনমূলক পরিবেশে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ববর্তী কাজের অগ্রগতি এবং সামনে এগানোর বিষয়ে পর্যালোচনা করেছে তিনটি পক্ষ। রোহিঙ্গাদের তাড়াতাড়ি প্রত্যাবাসনে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করতে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার লুও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যস্থতায় সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত রয়েছে চীন। উভয় দেশের বন্ধু হিসেবে চীন অনানুষ্ঠানিকভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক, সহ-মন্ত্রিপরিষদ স্তরের বৈঠক এবং ত্রিপক্ষীয় কার্যনির্বাহী ব্যবস্থাসহ আলোচনার জন্য বিভিন্ন চ্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে উভয় পক্ষকে আরও কাছে আনার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রত্যক্ষ যোগাযোগের ক্ষেত্রেও সহায়তা করে চীন।

উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী লুও আরও বলেন, রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষের বিষয়টি চূড়ান্তভাবে দ্বিপাক্ষিক। সুতরাং টেকসই সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা এবং পরামর্শের ওপর গুরুত্ব দেয়া দরকার। বৈঠকের ইতিবাচক ফলাফলগুলো দেখে খুশি চীন। পাশাপাশি রাজনৈতিক ও বৈষয়িক সহায়তার জন‌্য প্রস্তুত রয়েছে।

 

ঢাকা/হাসান/এসএন 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়