বৃষ্টি উপেক্ষা করে পশুর হাটে কেনাবেচা
রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা (বুধবার (২১ জুলাই)। রাজধানীতে পশুর হাটগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাবেচা।
ঈদের আগের দিন মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সকাল থেকে পছন্দের কোরবানির পশু কিনতে হাটগুলোতে ভিড় জমেছে ক্রেতাদের। এদিন সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে পশুর হাটে এসেছেন ক্রেতারা। দরদাম করে কিনছেন পছন্দের পশু।
রাজধানীর মেরাদিয়া, আফতাবনগর ও শাহজাহানপুর পশুর হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
গত চারদিন ধরে রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত ২১টি জায়গায় কোরবানির পশুর হাট বসেছে। এর মধ্যে ২টি স্থায়ী ও ১৯টি অস্থায়ী হাট রয়েছে। এবার ভারতী ও মিয়ানমার থেকে গরু আসেনি। তবুও হাটগুলোতে দেশীয় গরু-ছাগলে খাসা। চলছে জমজমাট কেনাবেচা।
তবে এ বছর পশু কেনা ও লালনপালনে অনেক খরচ বাড়ায় কোরবানির পশু দাম একটু বাড়তি চাচ্ছেন বেপারিরা। তারা বলছেন, গরু লালন-পালনে অনেক খরচ। ন্যায্য দামই চাচ্ছেন তারা। তবে ক্রেতারা বলছেন, গতবারের তুলনায় এবার দাম অনেকটাই বাড়তি। তাই ঈদের আগের দিন ন্যায্য দামে কোরবানির পশু কেনা-বেচার অপেক্ষায় আছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
ক্রেতাদের ধারণা, গত কয়েকদিন ধরে কোরবানির পশুর দাম বাড়তি হলেও শেষ দিনে দাম কমবে। আর বিক্রেতাদের ধারণা, কাঙ্খিত যাবে পশু বিক্রি করবেন তারা।
হাট ঘুরে দেখা গেছে, শেষদিনেও হাটগুলোতে গরু-ছাগলের ঠাসা। এরকম দৃশ্য এবারই প্রথম। কেউ কেউ বলছেন, করোনা ও টানা লকডাউনের প্রভাব পড়েছে হাটগুলোতে। এর মধ্যেও চলছে পশু কেনাবেচা। ব্যাপারিরা দাম বেশি চাইলেও, দামাদামি করে পশু কিনছেন ক্রেতারা।
তবে হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পরিপালন করা হচ্ছে না। সচেতনতা বাড়াতে মাইকিং করা হলেও তা মানা হচ্ছে না। বিশেষ করে ক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও অধিকাংশ বেপারিরা মানছেন না। হাটে স্বেচ্ছাসেবক থাকলেও তারা ব্যস্ত হাসিল কাউন্টার ঘিরে। কেউ কেউ দায়িত্ব পালন করছেন হাটের প্রবেশ গেটে।
কোরবানির পশু হাটগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত আছেন পুলিশ সদস্যরা। তারা নির্দিষ্ট বুথে বসে হাটের পরিস্থিতি খেয়াল রাখছেন। জালটাকা যাচাই-বাছাইয়ের ব্যবস্থাও আছে। মাঝে মাঝে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ টহলও দেখা গেছে। পশুর সুস্থতা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রয়েছেন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসক। তবে সোমবার বিকেল থেকে বৃষ্টি হওয়ায় হাটগুলোতে কিছুটা কাদাও সৃষ্টি হয়েছে।
শাহজাহানপুর গরুর হাটে বগুড়া থেকে আসা বেপারি হায়দার আলী রাইজিংবিডিকে বলেন, সোমবার ৬টি মাঝারি আকারের গরু নিয়ে এ হাটে এসেছি। এর মধ্যে একটি বিক্রি হয়েছে। তবে ক্রেতারা দাম কম বলছেন। এবার গতবারের চেয়ে গরুর দাম একটু বাড়তি। তাই কম দামে গরু বিক্রি করা যাচ্ছে না।
শাহজাহানপুর হাটে গরু কিনে বাসায় ফিরছিলেন মধ্য বাড্ডার বাসিন্দা শাহীন আহমেদ। তিনি বলেন, ৮৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনলাম। এবার দাম কিছুটা বেশি। গতবার এই আকারের গরু কিনেছে ৭৮ হাজার টাকায়।
বাসাবো থেকে মেরাদিয়া হাটে কোরবানির গরু কিনতে এসেছেন রহমান আজিজ। তিনি বলেন, গত দুইদিন ধরে কাঙ্খিত দামে গরু কেনার চেষ্টা করছি। তবে দামে হচ্ছে না। বিক্রেতারা এবার গরুর দাম বেশি হাঁকছেন। ১ লাখ ২০ টাকার মধ্যে গরু কেনার ইচ্ছা রয়েছে। প্রতিটি হাটেই এবার পশুর দাম বাড়তি। তাই এখনো গরু কিনতে পারিনি। ঈদের আগের দিন গরু কিনতে এসেছি। দামে মিলে গেলে গরু নিয়ে নেব।
/এনটি/এসবি/
আরো পড়ুন