ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

দাদুর পাশে থাকতে চাই, আব্বুকে সহায়তা করতে চাই: জাইমা রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৮, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১২:৫৯, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
দাদুর পাশে থাকতে চাই, আব্বুকে সহায়তা করতে চাই: জাইমা রহমান

(বাঁয়ে) খালেদা জিয়ার কোলে ছোট্ট জাইমা রহমান, (ডানে) বাবা-মা ও ‘দাদু’ খালেদা জিয়ার সাথে জাইমা রহমান।

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ঘিরে স্মৃতিচারণ করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমান। ‘দাদু’ সম্বোধনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছোটবেলার একটি ছবি পোস্ট করে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক পোস্টে জাইমা রহমান লিখেছেন, “আমি দাদুর পাশে থাকতে চাই। এই সময়টাতে আব্বুকে সর্বাত্মক সহায়তা করতে চাই।”

ফেসবুক পোস্টে জাইমা রহমান লিখেছেন, দাদুকে নিয়ে সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতিগুলোর একটি হলো- পরিবারের একজন অভিভাবক হিসেবে খালেদা জিয়ার মমতাময়ী রূপ। তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর বয়স যখন এগারো, তখন স্কুল ফুটবল টিম একটি টুর্নামেন্ট জিতলে তিনি মেডেল পান। মা ডা. জুবাইদা রহমান তাঁকে সরাসরি দাদুর অফিসে নিয়ে যান, যেন তিনি নিজেই দাদুকে বিজয়ের গল্পটি বলতে পারেন। গোলকিপার হিসেবে কীভাবে খেলেছেন, সে কথা উচ্ছ্বাসের সঙ্গে বলার সময় তিনি অনুভব করেছিলেন- দাদু গভীর মনোযোগ দিয়ে তাঁর কথা শুনছেন। পরে সেই গল্প অন্যদের কাছেও গর্বের সঙ্গে বলতেন খালেদা জিয়া।

জাইমা রহমান লেখেন, তিনি সবসময় জানতেন, তাঁর দাদুর কাঁধে একটি দেশের দায়িত্ব ছিল। লাখো মানুষের কাছে তিনি ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু পরিবারের কাছে তিনি ছিলেন শুধুই ‘দাদু’। তিনি পরিবারের খোঁজ রাখতেন, সময় দিতেন এবং গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে সাহস ও প্রেরণা জোগাতেন। এই ছোট ছোট অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি নেতৃত্বের প্রথম শিক্ষা পেয়েছেন- নম্রতা, আন্তরিকতা ও মন দিয়ে শোনার মানসিকতা।

পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের বাইরে কাটানো ১৭ বছর তাঁর জীবনকে অনেকভাবে বদলে দিয়েছে। তবে তিনি কখনো নিজের শিকড় ভুলে যাননি। লন্ডনে কাটানো দিনগুলো তাঁকে বাস্তববাদী ও বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন করেছে, যদিও তাঁর হৃদয়-মন সবসময় বাংলাদেশেই ছিল।

জাইমা রহমান লেখেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাঁকে শৃঙ্খলা ও বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান দিয়েছে, আর মানুষের সঙ্গে কাজ করা শিখিয়েছে দায়িত্ববোধ ও মানবিকতা। আইন পেশায় কাজ করতে গিয়ে তিনি কাছ থেকে দেখেছেন মানুষের জীবনের গল্প ও সংগ্রাম। ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের শোনা ও সমাধানের চেষ্টা করার অভিজ্ঞতা তাঁকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে।

তিনি আরো লেখেন, তিনি কখনো তাঁর ‘দাদা’কে দেখেননি, তবে সততা ও দেশপ্রেমের গল্প শুনেই বড় হয়েছেন। সেই আদর্শই দাদু ও আব্বু বহন করে চলেছেন। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান এবং ৫ আগস্টের আগে- পরে তিনি নেপথ্যে থেকে যতটা পেরেছেন ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছেন- কম বলেছেন, বেশি শুনেছেন।

দেশে ফেরার প্রসঙ্গে জাইমা রহমান লিখেছেন, অনেক বছর পর দেশে ফেরা তাঁর জন্য আবেগ ও অনুভূতির এক অনন্য সংমিশ্রণ। দেশে ফিরে তিনি ইনশাআল্লাহ দাদুর পাশে থাকতে চান এবং এই সময়ে আব্বুকে সর্বাত্মক সহায়তা করতে চান। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে দেশের জন্য নিজের সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে চান এবং মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে বাংলাদেশকে নতুন করে জানতে চান।

তিনি বলেন, তাঁর পরিবারকে ঘিরে জনগণের কৌতূহল ও প্রত্যাশা রয়েছে- কখনো আশার, কখনো প্রশ্নের। সেই প্রত্যাশা পূরণের দায়ভার তিনি অনুভব করেন। নিজের ভাষায় এটিই তাঁর গল্প, আর প্রত্যেক মানুষেরই একটি নিজস্ব গল্প রয়েছে- এই গল্পগুলো নিয়েই সবাই একসঙ্গে পথ চলতে পারে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর মেয়ে জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই দিন বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে তাদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণের কথা রয়েছে।

ঢাকা/আলী/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়