ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

প্রিডায়াবেটিস সম্পর্কে যা জানা জরুরি

দেহঘড়ি ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪১, ৩১ অক্টোবর ২০২০  
প্রিডায়াবেটিস সম্পর্কে যা জানা জরুরি

প্রিডায়াবেটিস হচ্ছে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের পূর্বাবস্থা। প্রিডায়াবেটিস একজন মানুষকে এই সতর্ক সংকেত দেয় যে, তিনি টাইপ ২ ডায়াবেটিসের খুব কাছাকাছি। যখন রক্ত শর্করা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, কিন্তু টাইপ ২ ডায়াবেটিসের পর্যায়ে যায়নি তাকে প্রিডায়াবেটিস বলে।

নিউ ইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব হেলথের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রিডায়াবেটিসের চিকিৎসা না করলে অথবা জীবনযাপনে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবর্তন না আনলে ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ মানুষেরই পাঁচ বছরের মধ্যে টাইপ ২ ডায়াবেটিস বিকশিত হয়।

প্রিডায়াবেটিসের কারণ ও ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মতো প্রিডায়াবেটিসও তখন হয় যখন কারো শরীর ইনসুলিনকে সঠিকভাবে প্রক্রিয়া করতে পারে না।ইনসুলিন হচ্ছে একটি হরমোন যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে অগ্ন্যাশয় দ্বারা নিঃসরিত হয়। কিছু বিষয় প্রিডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, যেমন-

অতিরিক্ত ওজন: এটা হলো প্রিডায়াবেটিস তথা ডায়াবেটিসের প্রধান ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়। একজন মানুষ বডি মাস ইনডেক্সের (বিএমআই) মাধ্যমে জানতে পারেন যে ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম? নাকি বেশি? নাকি স্বাস্থ্যসম্মত পর্যায়ে রয়েছে? উচ্চতা ও ওজনের মধ্যে তুলনা করে বিএমআই নির্ণয় করা হয়। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা নির্দেশক বিএমআই প্রিডায়াবেটিসের উচ্চ ঝুঁকিতে রাখে।

বড় কোমর: কোমরের আকার অস্বাভাবিক হলেও প্রিডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কোমর বড় হলে কোষের পক্ষে ইনসুলিন শোষণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। যেসব পুরুষের কোমর ৪০ ইঞ্চি ও নারীর কোমর ৩৫ ইঞ্চির বেশি তারা প্রিডায়াবেটিসের উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন। অন্যভাবে বলতে গেলে- পেটের চারপাশে যত বেশি চর্বি জমবে, কোষের পক্ষে ইনসুলিন প্রক্রিয়া করা তত কঠিন হবে।

অস্বাস্থ্যকর খাবার: প্রচুর পরিমাণে সাদা পাউরুটি ও পাস্তার মতো পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট খেলে প্রিডায়াবেটিসের ঝুঁকি উর্ধ্বমুখী হয়, কারণ এসব খাবারে রক্ত শর্করা দ্রুত বেড়ে যায়। এছাড়া অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে পেটে চর্বি জমে, যা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স সৃষ্টি করতে পারে।

অলস জীবনযাপন: ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো নিয়মিত ব্যায়াম করা।যিনি জীবনযাপনে যত বেশি অলসতার পরিচয় দেন, তার প্রিডায়াবেটিসের ঝুঁকি তত বেশি।

বয়স: যেকোনো বয়সে প্রিডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে, কিন্তু বয়স ৪৫ এর পর থেকে ঝুঁকি বেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর অ্যাজিং কেয়ারের মতে, চল্লিশোর্ধ্ব মানুষদের প্রিডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার কারণ হলো তারা দীর্ঘসময় ধরে চিনির মতো পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট ও অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে আসছেন।

পারিবারিক ইতিহাস: কারো মা বা বাবার ৫০ বছরের পূর্বে টাইপ ২ ডায়াবেটিস বিকশিত হয়ে থাকলে তারও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সাতভাগের একভাগ। মা বা বাবার ৫০ বছরের পর ডায়াবেটিস বিকশিত হলে এই ঝুঁকি ১৩ ভাগের একভাগ। প্রায় সকল টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সূচনা হয় প্রিডায়াবেটিস দিয়ে।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস: যেসব নারীর গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস বিকশিত হয় তাদের ৫০ শতাংশেরই পরবর্তীতে টাইপ ২ ডায়াবেটিস বিকশিত হয়। গর্ভাবস্থার ডায়াবেটিসকে জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বলে। জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকলে ও পরবর্তীতে টাইপ ২ ডায়াবেটিস বিকশিত হলে সন্তানেরও পরবর্তীতে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ২ থেকে ৪ শতাংশ।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়