ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

যশোরের পাঁচ সড়ক এখন মানুষের জন্য মরণফাঁদ

বিএম ফারুক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৮, ২২ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যশোরের পাঁচ সড়ক এখন মানুষের জন্য মরণফাঁদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উদ্বেগ থাকলেও যশোরের পাঁচটি জাতীয় সড়কের দুর্দশা নিয়ে একেবারেই নিশ্চুপ। সড়কগুলো এখন মানুষের জন্য মরণফাঁদ ও চরম দুর্ভোগের কারণ।

যশোর-খুলনা, যশোর-বেনাপোল, যশোর-ঝিনাইদহ, যশোর-মাগুরা এবং যশোর-নড়াইল এই পাঁচ সড়ক মোটেই যানবাহন চলাচলের উপযোগী নয়। গত বছরের জুলাইয়ের ভারী বর্ষণে এই সড়কগুলো ভেঙ্গেচুরে আরও বিবর্ণ হয়েছে। চলাচলের ব্যবস্থা করতে ইটবালু দিয়ে জোড়াতালির কাজ চললেও বর্তমান তাও বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পাঁচটি জাতীয় সড়ক ছাড়াও যশোরের রাজারহাট, মণিরামপুর, কেশবপুর, চুকনগর কেশবপুর-সরসকাঠি-কলারোয়া সড়ক এবং মনিহার হয়ে খুলনার সড়কগুলো ভেঙে একাকার হয়ে গেছে। এর মধ্যে যশোর-খুলনা মহাসড়ক ৩৮ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে চাঁচড়া মোড়, মুড়লী, রাজঘাট, বসুন্দিয়া, প্রেমবাগ, চেঙ্গুটিয়া ও ভাঙ্গাগেট পর্যন্ত বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

যশোর-বেনাপোল সড়কের ৩৮ কিলোমিটারের মধ্যে পুলেরহাট থেকে নাভারণ মোড় পর্যন্ত সড়কটির অবস্থাও বেহাল। সড়কটির এমন অবস্থা যে, গাড়ি চলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। যশোর থেকে বেনাপোল যেতে ৪০ মিনিট সময় লাগলেও রাস্তা খারাপের কারণে সময় লাগছে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা।

অন্যদিকে যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে ১২ কিলোমিটার সড়ক বিধ্বস্ত। সড়কের পালবাড়ী মোড় থেকে ঝিনাইদহের পাগলা কানাই পর্যন্ত বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একই অবস্থা যশোর-মাগুরা সড়কের। এই সড়কটির ২২ দশমিক ৫ কিলোমিটার সড়কের সীমাখালী ব্রিজ, পুলেরহাট থেকে লেবুতলা বাজার ও রজনীগন্ধা পাম্প পর্যন্ত ইট-বালি খোয়া উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ প্রচণ্ড ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে যানবাহনে চলাচল করছে।

যশোর-নড়াইল সড়কের ২০ কিলোমিটার সড়কের মণিহার থেকে হামিদপুর অংশের পর থেকে একই অবস্থা বিরাজ করছে। এ সড়কের বাউলিয়া বাজার থেকে শুরু করে চাঁচড়া বাজার পর্যন্ত চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কজুড়েই রয়েছে অসংখ্য বড় বড় গর্ত।

যশোর-খুলনা সড়কের মণিহার মোড় থেকে নওয়াপাড়া রাজঘাট পর্যন্ত পুরোটাতেই খানাখন্দ। যে কারণে মত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি। প্রতিদিনই এ রাস্তা দিয়ে খুলনা, ঢাকা, কুষ্টিয়াসহ আঞ্চলিক রুটের বাস-ট্রাক চলাচল করে।

ওই রুটে চলাচলকারী ট্রাক চালক শামীম হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে শুনে আসছি খুব দ্রুতই সড়কটি সংস্থার হবে। তবে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং দিন দিন আরও অবনতি হচ্ছে।’

অন্যদিকে, কয়েক মাস আগে যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়কের ভাঙা অংশে বিটুমিনের উপর ইট বিছিয়ে যোগাযোগ ঠিক রাখার চেষ্টা করা হলেও সেসব স্থানে আবারও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কের যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া, পুলেরহাট ও ঝিকরগাছা উপজেলার সেতুর দুইপাশে আমদানি ও রপ্তানি পণ্যবোঝাই ট্রাক ও যাত্রীবাহী যানবহনের তীব্র যানজটে মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এতে দুই দেশের আমদানি রপ্তানি চরমভাবে বিঘ্ন ঘটছে। সড়কটি সংস্কারে গত ঈদুল আজহার আগে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী পদক্ষেপের কথা বললেও তা কথার কথাই হয়ে রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর অঞ্চলের এ মহাসড়কগুলো সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কয়েক দফা নির্দেশনা দেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।আর এ মন্ত্রীর নির্দেশনার পর সওজের পক্ষ থেকেও শুধু আশ্বাসই দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

বর্তমান সরকারের চার বছর পূর্ণ হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র এক বছর সময় বাকি। এ সময়ের মধ্যে আদৌ সড়কগুলো সংস্কার হবে কিনা তা নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে।



রাইজিংবিডি/যশোর/২২ জানুয়ারি ২০১৮/বিএম ফারুক/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়