ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে ‘কোমেন’

সুজাউদ্দিন রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৩০ জুলাই ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে ‘কোমেন’

কক্সবাজার প্রতিনিধি : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় কোমেনের অগ্রভাগ কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও টেকনাফের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হেনেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হেনে ক্রমেই দুর্বল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

 

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সেন্টমার্টিন দ্বীপে গাছচাপায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। সেন্টমার্টিনসহ টেকনাফের চারটি ইউনিয়নে আংশিক ও সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে চার শতাধিক ঘরবাড়ি। উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা। উপড়ে যাওয়া গাছপালা সড়কের ওপর পড়ে থাকায় টেকনাফের বেশ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

 

কক্সবাজার আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক রাইজিংবিডিকে জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ‘কোমেন’ উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও টেকনাফ উপকূলে আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ৫১ থেকে ৬১ কিলোমিটার।

 

তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার পর ক্রমেই দুর্বল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার উপকূলের পাশ দিয়ে চট্টগ্রাম উপকূলে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল নাগাদ আঘাত হানতে পারে। সকাল সাড়ে ১০টায় ঘূর্ণিঝড়টি বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূল থেকে ৬০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল।

 

আবহাওয়াবিদ নাজমুল জানান, কোমেনের প্রভাবে জোয়ারের সময় সমুদ্রের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট বাড়তে পারে। ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

 

এদিকে ঘূর্ণিঝড়টি সেন্টমার্টিনসহ টেকনাফের চারটি ইউনিয়নে আংশিক ও সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে চার শতাধিক ঘরবাড়ি ও অসংখ্য গাছ বিধ্বস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সেন্টমার্টিন দ্বীপে নারকেল গাছ চাপা পড়ে মোহাম্মদ ইসলাম (৫০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি সেন্টমার্টিন দ্বীপের পশ্চিমপাড়ার মৃত মো. অলি আহমদের ছেলে।

 

সেন্টমার্টিনের ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন রাইজিংবিডিকে জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বুধবার দুপুর থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ঝোড়ো হাওয়া বইতে থাকে। রাতে এ ঝোড়ো হাওয়ার মাত্রা দিনের বেলার চেয়ে আরো তীব্র হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ঝোড়ো হাওয়ায় উপড়ে যাওয়া নারকেল গাছ চাপা পড়ে ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়ায় এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। ঝড়ে দ্বীপের অসংখ্য গাছপালা উপড়ে গেছে এবং আংশিক ও সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে শতাধিক বসতবাড়ি।

 

টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আলম জানান, টেকনাফে বৃহস্পতিবার ভোরে প্রবল ঝোড়ো হাওয়ায় উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় তিন শতাধিক ঘরবাড়ি আংশিক ও সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ২০ জনের বেশি লোকজন আহত হয়েছেন।

 

তিনি আরো জানান, উপকূলের মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে। এ ছাড়া উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে সরে আসতে মাইকিং করা হচ্ছে।

 

ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড. অনুপম সাহা জানান, কক্সবাজারের ৭১টি ইউনিয়নের মধ্যে উপকূলীয় এলাকার ২৮টি ইউনিয়নের মানুষকে ৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরে আসতে মাইকিং অব্যাহত রয়েছে।

 

এ ছাড়া আশ্রয় নেওয়া লোকজনের চিকিৎসাসেবার জন্য মেডিক্যাল টিম ও তদারকির জন্য আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে দুর্যোগকালীন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান অনুপম সাহা।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/৩০ জুলাই ২০১৫/সুজাউদ্দিন রুবেল/সনি/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়