ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

পুরুষের সমান কাজ, তবুও বেতন কম নারীর

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২০, ১ মে ২০২৩   আপডেট: ১২:২৪, ১ মে ২০২৩
পুরুষের সমান কাজ, তবুও বেতন কম নারীর

ডাবের দোকানে কাজ করেন সুরমি বেগম। ছবি: রাইজিংবিডি

পুরুষের পাশাপাশি সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা। দেশের শিক্ষা, কৃষি, অর্থনীতিসহ সব সেক্টরে নারীর পদচারণ রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে সকাল-সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করলেও বেতন ও মজুরি বৈষম্য থেকে বের হতে পারেননি নারীরা।

সোমবার (১ মে ২০২৩)  রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের নারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

আরো পড়ুন:

নারীরা জানান, কর্মক্ষেত্রে মজুরির বৈষম্য জেনেও জীবনের প্রয়োজনে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে, পুরুষ শ্রমিকদের সঙ্গে সমানতালে কাজ করলেও মাঝে মাঝে পুরুষ সহকর্মী, কখনও মালিকের হাতে নিগৃহীত হতে হয়। এমনকি অনেক সময় নারী বলে কাজে নিতেও আপত্তি জানান অনেকে।  কাজের ধরন, সময় অনুসারে মুজরি নির্ধারণ করা হলেও নারীরা প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষ শ্রমিকের অর্ধেক কিংবা তার চেয়েও কম মজুরি পান। পুরুষ শ্রমিক দৈনিক ৫০০-৮০০ টাকা মজুরি পেলেও নারী শ্রমিক পান ৪০০-৬০০ টাকা।

আরও পড়ুন: পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা স্থায়ী চাকরির নিশ্চয়তা ও সম্মান পাক

রাজধানীর যাত্রবাড়ী আড়তে কাজ করেন মর্জিনা বেগম।  তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এক বস্তা মাল নামালে পাই ৩-৫ টাকা। পুরুষরা পায় ৫-৬ টাকা।  এখানে এই নিয়ম, এক রকম কাজ করলেও নারী বলেই কম মজুরি পাচ্ছি’।

রাজধানীর রায়েরবাগে একটি নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করেন  কয়েকজন নারী। কেউ বালু, কেউ ইট ঝুড়িতে টানছেন।  তাদের একজন শিলা আক্তার।

তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ভোরে ঘুম থেকে উঠে ঘর গুছিয়ে, রান্না করে বের হয়েছি। এরপর অপেক্ষা করতে হয় কাজের জন্য। অনেক সময় নারী বলে কাজে নিতে চান না মালিক। কিন্তু একদিন কাজ না করলে তো সংসার চলবে না। নারী-পুরুষ একই কাজ করলেও আমাদের মজুরি কম। বেশির ভাগ জায়গায় পুরুষের মজুরির চেয়ে ২০০ টাকা কম পাই। প্রতিবাদ করলে কাজ দিবে না।’

ডাবের দোকানে কাজ করেন সুরমি বেগম। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা কাজ করি।  বেতন পাই ৪৫০ টাকা। আর একই কাজ পুরুষ করেন তিনি পান ৬৫০ টাকা। গরিবের কথা আর কে শোনে?’

আরও পড়ুন: ঝুঁকি নিয়ে জীবনযুদ্ধে শিশুরা

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু রাইজিংবিডিকে বলেন, আগের চেয়ে নারী শ্রমিকদের মজুরি কিছুটা বেড়েছে। তবে বৈষম্য দূর হয়নি।  সরকার শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি  ও নারীদের জন্য মজুরির সমতা নির্ধারণ করলে দ্রুত সমাধান হবে। নারীর কাজের মর্যাদাও নিশ্চিত হবে।

শ্রমিক ঐক্যের যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি আলমগীর মজুমদার বলেন, শ্রমিকরা সব জায়গায় বৈষম্যের শিকার হন।  সবচেয়ে নারীরা বেশি বৈষম্যের শিকার হন। কর্মক্ষেত্রে নানাভাবে হয়রানি, নির্যাতনের শিকার হন। নারীদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ জরুরি। শ্রম আইনের প্রতিফলন ঘটাতে সরকারের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করাসহ সরকার শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ও নারীদের জন্য মজুরির সমতা নির্ধারণ করলে দ্রুত সমাধান হবে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, দেশের প্রতিটি সেক্টরে  নারীর পদচারণ চোখে পড়ার মতো। সমাজের প্রতিটি অংশে নারীদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে সরকার। দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

আরও পড়ুন: মে দিবস: কে শুনবে নীরব কান্না?

/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়