ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বাহুবলে প্রথম ক্যাপসিকাম ফলিয়েই সফল কৃষক ছালাম

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৩, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১০:৩০, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩
বাহুবলে প্রথম ক্যাপসিকাম ফলিয়েই সফল কৃষক ছালাম

ক্যাপসিকাম ক্ষেতে কৃষক আব্দুস ছালাম ও উপসহকারী অফিসার মো. শামিমুল হক শামীম

হবিগঞ্জের বাহুবলে হাফিজপুর গ্রামে নিজ বাড়ির পাশে প্রায় ২০ শতক জমিতে মালচিং পেপার পদ্ধতিতে ক্যাপসিকাম চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক আব্দুস ছালাম।

তিনি পোকা দমনে ব্যবহার করেছেন হলুদ ফাঁদ ও ফেরোমন ফাঁদ। জমিতে প্রয়োগ করেছেন গোবর ও কিছু পরিমাণে সার। এসব ব্যবহার করায় ক্যাপসিকামের প্রচুর ফলন হয়েছে।  কোনো প্রকার রাসায়নিক ব্যবহার না করায় তার উৎপাদিত ক্যাপসিকাম বিষমুক্ত। 

আব্দুস ছালামকে রংপুর থেকে প্রায় ৮০০ ক্যাপসিকামের চারা সংগ্রহ করে দেন দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপসহকারী অফিসার মো. শামিমুল হক শামীম। জমিতে এ চারা রোপণ করা হয় অক্টোবরের শেষে। প্রায় দুই মাস পরিচর্যা করার পর গাছে গাছে ফলন আসে। বিক্রি শুরু হয় জানুয়ারির প্রথম থেকে। শুরুতে প্রতিকেজি ক্যাপসিকাম ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। পরে ১৮০ থেকে ১৩০ টাকা দামে বিক্রি করেন। 

আব্দুস ছালাম জানান, চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত ৭০ হাজার টাকার বিক্রি করেছেন। বাকী সময়ে আরও প্রায় ৩০ হাজার বিক্রি হওয়া সম্ভাবনা।

আব্দুস ছালাম বলেন, কঠোর পরিশ্রম করায় ক্যাপসিকামের ভাল ফলন হয়েছে। ক্যাপসিকামের চাষ করতে আগ্রহী ছিলাম না। উপসহকারী অফিসার মো. শামিমুল হক শামীম রংপুর থেকে চারা সংগ্রহ করে দিয়ে পরামর্শ প্রদান করেন। এতে আগ্রহী হয়ে চাষ করে লাভবান হয়েছি। ভাল ফলন দেখে স্থানীয় কৃষকরাও ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহী হয়েছেন।

স্থানীয় কৃষক তৌহিদ মিয়া বলেন, ক্যাপসিকাম ফেসবুকে দেখেছি। এখানে এ ফসলটি নতুন। কৃষি বিভাগ থেকে আমাকে বলা হলেছিলো, আমি চাষ করেনি। এখানে প্রথম চাষ করে সফলতা পেলেন কৃষক আব্দুস ছালাম। তবে আগামীতে আমি ক্যাপসিকামের চাষ করতে আগ্রহী।

শামিমুল হক শামীম বলেন, বাহুবলে ক্যাপসিকাম চাষ প্রথমে সফলতা পেয়েছেন কৃষক আব্দুস ছালাম। এ সাফল্য দেখে অন্যান্য কৃষকরাও ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহী হয়েছেন।  

তিনি বলেন, ঝুরঝুরে বেলে দোআঁশ মাটি ক্যাপসিকাম চাষের জন্য উপযুক্ত। যদিও সব মৌসুমেই ক্যাপসিকাম চাষ সম্ভব। তবে চারা একটু বড় হলে শক্ত খুঁটি দিতে হবে যাতে হেলে না পড়ে যায়। এছাড়া গাছের গোড়ায় আগাছা থাকলে সেগুলো সাবধানে তুলে ফেলতে হবে। চারা বসানোর প্রায় দুই মাস পর থেকে অর্থাৎ চারা গাছ তিন মাস হলেই ফল দিতে শুরু করে, যা পরবর্তী এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত ফল দিতে থাকে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, খেয়াল রাখতে হবে, ক্যাপসিকামের পাতায় যেন রোগের উপদ্রব না হয়। সাধারণত, দুই ধরনের রোগ দেখা যায় ক্যাপসিকামে। এর একটি হলো পাতা কুঁকড়ে যাওয়া আর অন্যটি হলো পাতায় কালো দাগ হওয়া। জাব পোকা দলবদ্ধভাবে পাতার রস চুষে খায়, এ কারণে পাতা কুঁকড়ে যায়। এ থেকে রক্ষা পেতে নিম বীজের দ্রবণ অথবা সাবানপানি স্প্রে করা যেতে করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১০ লিটার পানিতে দুই চা চামচ গুঁড়ো সাবান গুলিয়ে ব্যবহার করতে হবে। 

তিনি বলেন, বাহুবলের কৃষকদের মাঝে ক্যাপসিকামের চাষ ছড়িয়ে দিতে আমরা কজি করছি।

/টিপু/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ