ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর কূটনৈতিক দক্ষতা বিশ্বে অনন‌্য

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১৭, ১৭ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১১:১৯, ১৭ মার্চ ২০২১
বঙ্গবন্ধুর কূটনৈতিক দক্ষতা বিশ্বে অনন‌্য

বাংলাদেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান যেমন অনন‌্য, তেমনি সদ্যগঠিত দেশটির কূটনৈতিক কৌশল নির্ধারণেও ছিল অনন্যতা। সব ভেদাভেদ ভুলে দেশের সব ধরনের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন তিনি।

একই মনোভাব ছিল প্রতিবেশী দেশ থেকে শুরু করে অন্য দেশগুলোর ক্ষেত্রেও- কারো সাথে শত্রুতা নয়, সবার সঙ্গে  বন্ধুত্ব।  বঙ্গবন্ধুর এই নীতির ওপর স্বাধীনতার ৫০তম বছরেও চলছে বাংলাদেশের কূটনৈতিক কৌশল।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন রাইজিংবিডিকে বলেন, অর্থনৈতিক কূটনীতিতে জোর দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে পারস্পরিক আস্থা ও সার্বভৌমত্বের জোরালো ভিত্তির ওপর সব বন্ধু দেশের সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব চায় বাংলাদেশ সরকার। এই মূলনীতি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং নীতির ওপর উপরের ভিত্তি করেই নেওয়া।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের কূটনৈতিক নীতি নির্ধারণ করাও হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নীতির সঙ্গে মিল রেখে। জাতির জনকের কূটনৈতিক কৌশল অনুসরণ করে- সবাই আমাদের বন্ধু, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়। আমরা সবার সক্রিয় সহযোগিতা, অংশীদারিত্ব চাই। সবার সমর্থন চাই। বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতাও আমরা চাই। ২০২১ সালে মধ্য আয়ের দেশ, ২০৩০ সালে সহস্রাব্দ উন্নয়নের সবগুলো লক্ষ্য অর্জন আর ২০৪১ সালে সোনার বাংলায় পরিণত হওয়াসহ সরকারের একাধিক রূপরেখা রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা যেটা উন্নত, স্থিতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক অর্থনীতি। যেখানে ধনী-দরিদ্রের আকাশসম পার্থক্য থাকবে না। যেখানে সব নাগরিকের সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, একটা বিষয় বলা যেতে পারে- আমি যখন জাতিসংঘে ছিলাম তখন আমরা সেখানে কোনো ভোটে পরাজিত হয়নি। এর অন্যতম কারণ হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও পররাষ্ট্র নীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারোর সঙ্গে বৈরিতা নয়’- আমরা গ্রহণ করেছিলাম।

বঙ্গবন্ধুকে বিবেচনা করা হতো বিশ্বের একজন বিশ্বমানের কূটনীতিক ব্যক্তিত্ব। বিভিন্ন সময়ে মিডিয়ায় বিশ্বনেতাদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আলাপের বিভিন্ন আলোকচিত্র প্রকাশ হয়েছে। এসব আলোকচিত্রে লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, বঙ্গবন্ধুর মুখের অভিব্যক্তি যেন তাদের সমকক্ষ পর্যায়ের ছিল। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের কিংবা তৃতীয় বিশ্বের একজন নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে কখনো মাথা নিচু করে আলাপ করতে দেখা যায় নি। এসবই ছিল তার কূটনৈতিক অর্জন।

বঙ্গবন্ধুর অন্যতম কূটনৈতিক দর্শন ছিল- বহুপাক্ষিকতাবাদ ও শান্তির কূটনীতি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর দ্বারা প্রণয়ন করা ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি’র মৌলিক কথা ছিল- ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এবং ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান’। স্বাধীনতার এত বছর পরেও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি এবং কূটনৈতিক তৎপরতা সেই আদর্শকেই ধারণ করেই আবর্তিত হচ্ছে। এমনকি বঙ্গবন্ধুর সেই দর্শনের ওপর ভিত্তি করেই আজকের বাংলাদেশ বিশ্ব সমাজের সঙ্গে দৃঢ়তর সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। এখন সব রাষ্ট্রের সঙ্গেই বাংলাদেশের রয়েছে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সুসম্পর্ক।

পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে কোনো সার্বভৌম রাষ্ট্রের গৃহীত সেসব নীতি যা রাষ্ট্র তার রাষ্ট্রীয় স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে সম্পাদন করে থাকে। অন্য রাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতাকে তুলে ধরে।

 

হাসান/সাইফ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়