ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

হাকালুকি হাওরে বেড়েছে অতিথি পাখির সংখ্যা

সাইফুল্লাহ হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৭, ৩১ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হাকালুকি হাওরে বেড়েছে অতিথি পাখির সংখ্যা

এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকিতে প্রতি বছর শীত মৌসুমে নানান প্রজাতির অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকলেও গত কয়েক বছর সংখ‌্যা কমে গিয়েছিল। তবে এবার গত বছরের তুলনায় বেড়েছে পাখির সংখ্যা, দেখা মিলেছে মহাবিপন্ন প্রজাতির পাখিও।

অতিসম্প্রতি দুদিনের পাখিশুমারি থেকে এমন তথ‌্য বেরিয়ে এসেছে।

বর্ষাকালে হাওর পানিতে টুইটুম্বুর থাকে, সেইসঙ্গে থাকে প্রচুর বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ।  আর শীত মৌসুমে অতিথি পাখিরা নিরাপদে আশ্রয়স্থল হিসেবে এই হাওরের খ্যাতি আছে। বর্ষা মৌসুমের ৪৮ হাজার হেক্টর জুড়ে বিশাল এ হাওরের আয়তন শুকনা মৌসুমে ২৫ হাজার হেক্টরে নেমে আসে।

হাকালুকি হাওরের মৌলভীবাজার অংশে এ বছর মহাবিপন্ন বেয়ারের ভুতিহাঁস, সংকটাপন্ন পাতি ভুতিহাঁস এবং প্রায়-সংকটাপন্ন মরচেরং ভুতিহাঁস, ফুলুরি হাঁস, কালামাথা কাস্তেচরা, উত্তুরে টিটি, উদয়ী গয়ার অন্যতম।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) বাংলাদেশের উদ্যোগে দুই দিনের পাখিশুমারি শেষে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ২৮ ও ২৯ জানুয়ারির (মঙ্গলবার ও বুধবার) পাখি শুমারিতে মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরে ৫৩ প্রজাতির ৪০ হাজার ১২৬টি জলচর পাখি পাওয়া গেছে। এ দুই দিন হাওরের ৪০টি বিলে জলচর পাখিশুমারি করা হয়। বুধবার রাতে শুমারির ফল প্রকাশ করা হয়।

শুমারিতে অংশ নেন পাখি বিশেষজ্ঞ ড. পল থমসন, ইনাম আল হক এবং পাখি শুমারি নিয়ে কাজ করা ওমর শাহাদাত, শাহেদ ফেরদৌস, শফিকুর রহমান ও তারেক অণু।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর পাখির সংখ্যা ২০১৯ সালের চেয়ে সামান্য বেশি। তবে ২০১৮ ও ২০১৭ সালের চেয়ে কম। ২০১৯ সালে হাকালুকিতে ৩৭ হাজার ৯৩১টি পাখির দেখা মেলে। এর আগে ২০১৮ সালে ৪৫ হাজার ১০০টি এবং ২০১৭ সালে ৫৮ হাজার ২৮১টি পাখির দেখা মেলে পাখি শুমারিতে।

হাকালুকির ৪০টি বিলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাঁচ হাজার ৪৩০টি পাখি পাওয়া গেছে চৌকিয়া বিলে। এরপর পাঁচ হাজার ১৪৭টি পাখি পাওয়া গেছে চ্যাতলা বিলে। এ ছাড়া ফুটবিলে চার হাজার ৯৮৩টি পাখি ও বালিয়াজুরি বিলে তিন হাজার ৩০৫টি পাখি পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সহ-সভাপতি তারেক অণু জানান, হাওড়খালে বিষটোপ দিয়ে মারা পাখিও পাওয়া গেছে। তিনি জানান, দুই দিনব্যাপী হাকালুকি হাওরের ৪০টি বিলে পাখিশুমারি চলে। বিলগুলো হলো- হাওয়াবন্যা, কালাপানি, রি, দুধাই, গড়কুড়ি, চৌকিয়া, উজান-তরুল, ফুট, হিংগাউজুড়ি, নাগাঁও, লরিবাঈ, তল্লার বিল, কাংলি, কুড়ি, চেনাউড়া, পিংলা, পরোটি, আগদের বিল, চেতলা, নামা-তরুল, নাগাঁও-ধুলিয়া, মাইছলা-ডাক, চন্দর, মালাম, ফুয়ালা, পলোভাঙা, হাওড় খাল, কইরকণা, মোয়াইজুড়ি, জল্লা, কুকুরডুবি, বালিজুড়ি, বালিকুড়ি, মাইছলা, গড়শিকোণা, চোলা, পদ্মা, কাটুয়া, তেকোণা, মেদা, বায়া, গজুয়া, হারামডিঙা ও গোয়ালজুড়।

বাংলাদেশ জলচর পাখি জরিপের জাতীয় সমন্বয়ক ও পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বলেন, ‘প্রতি বছরই প্রচুর অতিথি পাখি হাকালুকি হাওরে বিচরণ করে। আশাজাগানিয়া তথ্য হচ্ছে, এবছর কিছু বিপন্ন পাখির সন্ধান পাওয়া গেছে।’

 

মৌলভীবাজার/সাইফুল্লাহ হাসান/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়