বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় লাশ ফেলে পালালেন স্বামী
নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
যৌতুকের চাপে স্ত্রী আকলিমা বেগম গলায় ফাঁস দেওয়ার পর চিকিৎসকের কাছে নিয়েছিলেন স্বামী সাগর হোসেন। তবে সেখানে নিতেই স্ত্রীর মৃত্যু হলে বৃষ্টির মধ্যে লাশ রেখেই স্বামী পালিয়ে যান।
ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর গ্রামে।
এলাকাবাসী জানায়, যৌতুকের টাকা দিতে না পাড়ায় আকলিমা খাতুন (১৩) নামে ওই কিশোরী স্ত্রীকে প্রায়ই স্বামী সাগর হোসেন (৩২) নির্যাতন করতেন। সোমবার নির্যাতন করে মেয়েটার স্বর্ণের গহনা কেড়ে নিয়ে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু মেয়েটা বাবার বাড়িতে না গিয়ে পাশের গ্রামে দুলা ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানেই আকলিমা স্বামীর অপর রাগ অভিমানে গতকাল মঙ্গলবার রাতে গলায় ফাঁস নেয়।
আকলিমা দুলাভাই টিকা খান সাগরকে খবর দিলে সেখান থেকে আকলিমাকে খুবজিপুর বাজারের এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায় সাগর ও তার পরিবারের লোকজন। সেখানেই মেয়েটা মারা যায়। মারা যাওয়ার কথা শুনেই লাশ বাজারে রেখেই স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। ওই সময় থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। আড়াই ঘণ্টা মরদেহটি বৃষ্টিতেই ভাসছিল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুরুদাসপুর থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় তিনমাস আগে আকলিমা এবং সাগরের বিয়ে হয়। নিহত আকলিমা পার্শ্ববর্তী তারাশ উপজেলার কুসুম্বি গ্রামের আশরাফ আলীর মেয়ে। তার স্বামী সাগর হোসেন খুবজিপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে।
মেয়েটির দুলাভাই টিক্কা খান জানান, তিনমাস আগে আকলিমাকে সাগরের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের সময় সাগরকে স্বর্ণসহ ১ লাখ টাকা যৌতুক দেয় আকলিমার পরিবার। পরে আকলিমার কাছে আবারও যৌতুক দাবি করে সাগর ও তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এ নিয়ে সাগর ও আকলিমার মধ্যে বাকবিতণ্ডা লেগেই থাকতো। আকলিমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রায়ই নির্যাতন চালাতো সাগর। সবশেষ গত রোববার বিকেলে সাগর ও সাগরের পরিবারের লোকজন যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেয়। সোমবার আকলিমাকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দিলে আকলিমা তার দুলা ভাই টিক্কা খানের বাড়িতে চলে আসে। মঙ্গলবার আকলিমা গলায় ফাঁস দেয়।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, সাগরের আগের স্ত্রী আত্মহত্যা করেছিলেন।
আরিফুল/সাজেদ
আরো পড়ুন