ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

অপহরণের মামলা কনের বাবার, বরের দাবি ভালোবাসার বিয়ে

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৭, ৫ নভেম্বর ২০২০  
অপহরণের মামলা কনের বাবার, বরের দাবি ভালোবাসার বিয়ে

মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেছেন কনের মা বিলকিছ বেগম। এদিকে, বর রাফিউল বাসারের (২৫) দাবি অপহরন নয়, ভালোবেসে বিয়ে করেছেন তার মেয়ে সাদিয়াকে।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে অপহরণের অভিযোগে মামলার বিষয়টি  ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি )মাহমুদুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, মামলা ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বর রাফিউল বাসারের পরিবারের সদস‌্যরা।

তারাকান্দা উপজেলার কামারিয়া গ্রামের বাসিন্দা অলি উল্লাহর ছেলে রাফিউল বাসার (২৫)।  গত একমাস আগে রাফিউল বাসার ত্রিশাল উপজেলার নয়পাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছেন। এ ঘটনায় গত ১৩ অক্টোবর ত্রিশাল থানায় মেয়ের মা বিলকিছ বেগম বাদী হয়ে মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ এনে মামলা করেছে। মামলায় অলি উল্লাহকেও আসামি করা হয়েছে। তারপর থেকে পুলিশের ভয়ে শুধু অলি উল্লাই নয় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পরিবারের সব সদস্য।

ষাটোর্ধ বৃদ্ধ অলি উল্লাহ বলেন, ‘গত ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় ছেলে রাফিউল ফোনে কল দিয়ে বললো, আব্বা তোমাদের না জানিয়ে আমি একটা কাজ করে ফেলেছি। আমাকে মাফ করে দিও। আমি বললাম কি করেছিস? ছেলে উত্তর দিলো আমি বিয়ে করে ফেলেছি। জিজ্ঞেস করলাম তুই এখন কোথায়? আমি এক জায়গায় আছি। তুমি চিন্তা করো না। এই বলে কলটা কেটে দিল।  আবার কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। এরপর থেকে মাঝে মধ্যে ছেলে ফোন করে খোঁজ নেয়।’

অলি উল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কোন বাবা- মা চায়না তাদের সন্তান পালিয়ে বিয়ে করুক। কিন্তু তারপরও বর্তমান সময়ে প্রায়ই শোনা যায় এমন ঘটনা। কোন বাবাকি ছেলেকে মেয়ে অপহরণের জন্য সহযোগিতা করে? সবকিছু জানার পরও মেয়ের পরিবার আমাদের ওপর মামলা করেছে। পুলিশ আমার বাড়িতে এসে আমাদের খোঁজে। এই বয়সে আমাদের পালিয়ে থাকতে হচ্ছে।  সন্তান জন্ম দিয়ে মনে হয় পাপ করেছিলাম। এজন্য এমন শাস্তি ভোগ করছি।’

কান্না জড়ানো কণ্ঠে অলি উল্লাহ বলেন,  ‘কখনো আত্মীয় স্বজনদের বাসায় বেড়াতে গিয়ে একদিনের বেশি থাকিনি। এখন অন্যের বাড়িতে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। বয়স হয়েছে। শরীরটাও ভালো না। এভাবে পালিয়ে থাকতে কষ্ট হয়।’

অলি উল্লাহর ছেলে রাফিউল বাসার মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি সাদিয়াকে অপহরণ করিনি। আমরা ভালোবেসে বিয়ে করেছি।’

বিষয়টি নিয়ে রাফিউল নিজের ফেইসবুক টাইমলাইনে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে সাদিয়া বলেছেন, ‘আমি নিজের ইচ্ছায় পালিয়ে বিয়ে করে সংসার করছি। ভিডিওতে সে তার পরিবারকে অনুরোধ করেছে যাতে তার শ্বশুরের পরিবারের কাউকে হয়রানি না করা হয়।’

এ বিষয়ে কথা বলতে সাদিয়ার পরিবারের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান, গত ১৩ অক্টোবর সাদিয়া নামে এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। মেয়েটিকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।  ভিকটিম উদ্ধারের পর তদন্ত করে বোঝা যাবে কি ঘটনা।

মিলন/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়