ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

টাকা নিয়ে বিনামূল্যের বই বিতরণ, অভিযোগ তদন্তে কমিটি

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৪, ৪ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৪:৫৩, ৪ জানুয়ারি ২০২১
টাকা নিয়ে বিনামূল্যের বই বিতরণ, অভিযোগ তদন্তে কমিটি

ঝিনাইদহে বিনামূল্যের বই বিতরণে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ঘোড়শাল হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে। ওই মাদ্রাসায় গিয়েও এ তথ্যের সত্যতা মিলেছে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, সেশন ফি ও ভর্তি ফিসহ নানা অজুহাতে এ টাকা নেওয়া হচ্ছে। আর পুরাতন বই জমা দিতে না পারলেও বই প্রতি ৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। 

অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানান, উৎসব ছিলো বিনামূল্যে বই পাওয়ার। আর শিক্ষার্থীরা সে নতুন বই পাওয়ার আনন্দ কুড়াতে ওই মাদ্রাসায় এসেছিলো। কিন্তু সে আনন্দে ভাটা পড়ে মাদ্রাসার সুপার মো. ওয়াজেদ আলী যখন জানান, সরকারি বই নিতে হলে ভর্তি ফি দিতে হবে। তখন দরিদ্র অনেক শিক্ষার্থী টাকা পরিশোধ করতে না পেরে নতুন বই নিতে পারেনি। অনেকেই দাবিকৃত ৩৫০ থেকে ৭৫০ টাকা পরিশোধ করে মাদ্রাসা থেকে নিয়েছে নতুন বই। আবার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পুরাতন বই জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করে একটি বই হারিয়ে গেলে তার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে ৫০ টাকা।

শনিবার (২ জানুয়ারি) মাদ্রাসায় গেলে মাদ্রাসা সুপারসহ অনান্য শিক্ষক দ্রুত টাকা লুকিয়ে ফেলে অপ্রস্তুত হয়ে যান। তখন কয়েকজন বই নিতে আসা শিক্ষার্থী থাকলেও তাদেরকে কৌশলে পাঠিয়ে দেন তারা।

ঘোড়শাল গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে সাড়ে তিনশ টাকা পরিশোধ করেই পেয়েছে নতুন বই। আরেক হতদরিদ্র বাবার মেয়ে (৮ম শ্রেণি) টাকা দিতে না পারার কারণে নতুন বই থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, টাকা না হলে স্যারেরা নতুন বই আমাদের দিচ্ছেন না। বলছেন টাকা দেও, নতুন বই নেও। এদিকে টাকা নেওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা সুপারসহ জড়িতদের শাস্তি চেয়েছেন।

অভিযুক্ত সুপার ওয়াজেদ আলী টাকার বিনিময়ে বই বিতরণের কথা অস্বীকার করে বলেন, বিনামূল্যে বই দেওয়া হচ্ছে। শুধু ভর্তি ফি নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ভুল বুঝে এমন রটাচ্ছেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি পারভেজ মাসুদ লিল্টন জানান, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন যারা করছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাফফর হোসেন পলাশ বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে জড়িত সুপারসহ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  আমিসহ দু সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।  আমরা ৩ দিনের ভিতরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবো।

অপরদিকে, জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, মাদ্রাসাটির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।  প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজিব হাসান/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়