ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে ঘুরছি, ওষুধ নেই

মোসলেম উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৪, ২৯ জানুয়ারি ২০২১  
প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে ঘুরছি, ওষুধ নেই

প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে ঘুরছি, ওষুধ নেই, ভর্তির পর থেকে ডাক্তারের দেখা নেই- এমন অভিযোগ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীদের। 

আবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন- পর্যাপ্ত ওষুধ আছে, তবে ডাক্তারের সংকট।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, শীতজনিত কারণে সর্দি-জ্বর আর কাশিতে অসুস্থ হয়ে পড়া শিশুদের নিয়ে হতদরিদ্র অসহায় মা-বাবাদের ভিড়। যাদের ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই।  একান্ত নিরুপায় হয়ে এসব মা-বাবা তার সন্তানকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে আসছেন।  কিন্তু ফার্মাসিস্ট বলছেন ওষুধ নেই। হাসপাতালের দোতলার পুরুষ, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডগুলোতে রোগীরা নিথর শুয়ে আছেন। তাদের কোন ডাক্তারি সেবা কিংবা হাসপাতালের পক্ষ থেকে কোন ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। ফলে খালি হাতে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে।

ঘোড়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুরুষ ওয়ার্ডের ২ নং বেডের আরিফুল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) থেকে এখানে পড়ে আছি। ভর্তির দিন ডাক্তার দেখেছেন। তারপর আর ডাক্তার আসেননি।

মহিলা ওয়ার্ডের ৭ নং বেডের দিপ্তী রানী বলেন, তিনদিন থেকে ভর্তি আছি। বাহির থেকে সব ওষুধ কিনছি।

৬ নং বেডের রহিমা বেগম বলেন, চারদিন থেকে এখানে পড়ে আছি, কোন ডাক্তার নাই।

৩ নং বেডের মাহফুজা বেগম বলেন, কখনও ওষুধ দেয়, আবার দেয় না।  ডাক্তারকে চোখে পড়ে না।

৪ নং বেডের জুলেখা বেগম বলেন, এক মাস থেকে হাসপাতালে ভর্তি আছি, পায়ের ঘা শুকাচ্ছে না।  কোন গুরুত্ব নেই, ভাল কোন চিকিৎসাও দিচ্ছেন না তারা।

শীতে সর্দি-জ্বর আর কাশির ওষুধের জন্য বাচ্চাদের কোলে নিয়ে সোহরাব আলী, লিলি বেগম, রাবেয়া বেগম হাসপাতালের বারান্দায় ঘুরছেন। তারা জানালেন, ছেলের ওষুধ কিনতে না পেরে হাসপাতালে এসেছেন, কিন্তু ডাক্তার বলছেন ওষুধ নেই। বাহির থেকে কিনতে হবে।

ঘোড়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মনির-উজ-জামানের কাছে ওষুধ না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমান সর্দি-কাশি আর জ্বরের ওষুধ নেই।  ১৫ থেকে ২০ দিন আগে থেকে রোগী বেশি হওয়ার কারণে ওষুধ শেষ হয়ে গেছে।

ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল নুর নেয়াজ আহমেদি বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ আছে, কোন সমস্যা নেই। তবে ডাক্তার সংকট, একজন ডাক্তার ট্রেনিংয়ে, মহিলা ডাক্তার অসুস্থ। মাত্র ৩ জন ডাক্তার দিয়ে পুরো হাসপাতালের সেবা দিয়ে আসছি। যার কারণে রোগীদের সেবা কম হচ্ছে। আশা করছি সব ঠিক হয়ে যাবে।

এবিষয়ে দিনাজপুর সিভিল সার্জন মোহাম্মদ কুদ্দুস আলী বলেন, বিষয়টি জানলাম, সরেজমিনে গিয়ে এর সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

দিনাজপুর/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়