ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

নারী চিকিৎসককে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, নিরাপত্তাকর্মী গ্রেফতার

নোয়াখালী প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১৯, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২  
নারী চিকিৎসককে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, নিরাপত্তাকর্মী গ্রেফতার

নোয়াখালী ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নারী ইন্টার্নি চিকিৎসকের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে নিরাপত্তাকর্মীর বিরুদ্ধে।

রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) হাসপাতাল ক্যাম্পাসের জরুরী বিভাগ সংলগ্ন পাবলিক টয়লেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা একত্রিত হয়ে ওই নিরাপত্তাকর্মীকে মারধর করে আহত করে। পরে তাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনার প্রতিবাদে ও হেনস্তাকারীর গ্রেফতারের দাবিতে রোববার (১৮ সে্প্টেম্বর) বিকেল থেকে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট পালন করে। এই ঘটনায় হেনস্তার শিকার ওই নারী চিকিৎসক সুধারাম মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করলে রোববার রাতে পুলিশ নিরাপত্তাকর্মীকে হাসপাতাল থেকে আটক করে। সোমবার বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরপর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও হেনস্তার শিকার আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন নারী চিকিৎসক জানান, রোববার তিনি হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ডিউটি শেষে শহরের বাসায় ফেরার পথে জরুরী বিভাগ সংলগ্ন পাবলিক টয়লেটের সামনে রোহিঙ্গা ওয়ার্ডে কর্তব্যরত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিরাপত্তাকর্মী আশরাফ উদ্দিন (৫০) এর মুখোমুখি হন। এ সময় আশরাফ উদ্দিন শারীরিকভাবে তাকে হেনস্তা করেন। এ সময় নারী চিকিৎসকের সঙ্গে থাকা এক যুবক তাকে ধরে মারধর করে। খবর পেয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ঘটনাস্থল এসে ওই নিরাপত্তাকর্মীকে মারধর করলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে বিকেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

খবর পেয়ে নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার ও জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রাতেই হাসপাতাল পরিদর্শন করে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় ইন্টার্ন চিকিসকদের দাবি মেনে নেওয়া হয়। এই ঘটনায় নারী চিকিৎসক সন্ধ্যায় সুধারাম মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ রাতেই নিরাপত্তাকর্মীকে আটক করে। 

ইন্টার্নী চিকিৎসক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. অনিক বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালে নারী চিকিৎসকরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন। ডিউটি ডাক্তারের রুম থেকে রাতে অন্যান্য ওয়ার্ডে যেতে সড়কে বাতি থাকে না। এ সময় বহিরাগত বখাটেরা হাসপাতালের সড়কে মাদক সেবন করে এবং নারী চিকিৎসকদের উত্ত্যক্ত করে। তাই নারী চিকিৎসকদের নিরাপত্তা, ডিউটি ডাক্তারের কক্ষে ওয়াশরুমের ব্যবস্থ্যা, পর্যাপ্ত ফার্নিচারের ব্যবস্থা করা এবং তাদের  ইন্টার্নশিপ ভাতা প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে পরিশোধের দাবি জানান। তাদের দাবি মেনে নেওয়া হলে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সোমবার বিকাল থেকে কাজে যোগ দিয়েছেন। 

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই ঘটনার পর হেনস্তাকারী নিরাপত্তা প্রহরীকে পুলিশে সোপর্দ ও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, এই ঘটনায় নোয়াখালী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাইমা নুসরাত জেবিন কে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, নারী চিকিৎসকের অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসাবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 
 

সুজন/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়