ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কুয়াকাটা সৈকতের যত্রতত্র পলিথিন ও প্লাস্টিক, বিরক্ত পর্যটক 

ফরাজী মো. ইমরান, পটুয়াখালী  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৯, ৬ জানুয়ারি ২০২৩  
কুয়াকাটা সৈকতের যত্রতত্র পলিথিন ও প্লাস্টিক, বিরক্ত পর্যটক 

কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্টের পূর্ব ও পশ্চিমে এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিন ও ডাবের খোসা। এসব ময়লা আবর্জনা দেখে সমুদ্র কন্যা হিসেবে খ্যাত দেশের অন্যতম এ পর্যটন কেন্দ্র বেড়াতে আসা পর্যটকদের মুখে বিরক্তির ছাপ ফুটে উঠেছে।

এদিকে প্রশাসন কর্তৃক সৈকত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ‍উদ্যোগ না নেওয়া এবং অসচেতন কিছু পর্যটকদের কারণে সৈকতের এমন অবস্থা বলে দাবি করেছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। 

কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা একাধিক পর্যটকরা জানান, ইটপাথরের পরিবেশ থেকে নিজেদের একটু প্রশান্তি দিতে সমুদ্রে বেড়াতে আসা। এখানে এসে পর্যটন স্পটগুলো দেখে সবাই যেমন মুগ্ধ হন তেমনি সৈকতের যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পলিথিন ও প্লাস্টিক সবার মধ্যে বিরক্তির জন্ম দিচ্ছে। এসব পলিথিন ও প্লাস্টিকের কারণে শুধু যে সৈকতের পরিবেশই নষ্ট হচ্ছে তা নয় সঙ্গে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্যও পড়েছে হুমকির মুখে।

মেহেরপুর থেকে আসা পর্যটক ফোরকান-রাহেলা দম্পত্তি বলেন, কুয়াকাটার সবকিছুই বেশ ভালো। তবে কুয়াকাটা সৈকতে অনেক প্লাস্টিক রয়েছে। এসব বর্জ্যের কারণে আমরা অনেকটা বিরক্ত হয়েছি। এগুলো পরিস্কার না করলে পর্যটকরা সহজে সৈকতে ঘুরে বেড়াতে পারবেন না। 

বরগুনা থেকে আসা পর্যটক ইমন সরকার বলেন, ‘আমরা বন্ধুরা মিলে কুয়াকাটায় এসেছি। এখানের পরিবেশটা অনেক সুন্দর। তবে সৈকতে পড়ে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিবেশটা নষ্ট করছে। মূলত আমরা যারা ভ্রমণে আসি তারাই সৈকতটাকে অপরিস্কার করে ফেলি। সবাই একটু সচেতন হলে সৈকতের এই দুরাবস্থা থাকতো না। তবে আমরা বন্ধুরা মিলে কিছু পলিথিন ও প্লাস্টিক কুড়িড়ে ডাষ্টবিনে ফেলেছি।’  

কুয়াকাটা ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ‘সৈকতকে পরিস্কার রাখার জন্য আমরা ১০-১২ টি পেশার ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের মাধ্যমে ট্রেনিং করিয়েছি। এছাড়া গত বুধবার টোয়াকের উদ্যোগে প্রায় দুইশো ময়লা রাখার ডাষ্টবিন বিভিন্ন পয়েন্টে দেওয়া হয়েছে । তবে সরকার যদি আরো একটু খেয়াল দিতো তাহলে সৈকত সব সময় পরিস্কার রাখা সম্ভব।’

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক বলেন, ‘সৈকতে যেন ময়লা না ফেলা হয় সে জন্য আমরা বারবার মাইকিং করে সতর্ক করি। সপ্তাহে একবার আমাদের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাই। তবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ যদি সবসময় লোক নিয়োজিত রাখে তাহলে সৈকত পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব।’ 

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘কুয়াকাটা সৈকতকে পরিস্কার রাখার জন্য সার্বিকভাবে  কাজ করা হচ্ছে। আমাদের কয়েকটি টিম সকাল বিকেল ময়লা পরিস্কার করছে। কিন্তু কিছু অসচেতন পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের কারণে এই সমস্যাটা রয়েই গেছে।’ 

কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘কুয়াকাটা সৈকতে যত্রতত্র ময়লা পরিস্কার এবং সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়