ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কাউনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টেকনোলজিস্টের অভাবে পরীক্ষা বন্ধ 

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  
কাউনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টেকনোলজিস্টের অভাবে পরীক্ষা বন্ধ 

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ। চিকিৎসক ও নার্স সংকট না থাকলেও টেকনোলজিস্টদের অভাবে দীর্ঘদিন বন্ধ এক্স-রে, আল্টাসনোগ্রামসহ সব ধরনের প্যাথলজি পরীক্ষা।

ফলে সরকারি এ হাসপাতালে পরীক্ষা করতে না পেরে বাইরে থেকে দুই-তিন গুণ বেশি টাকা দিয়ে পরীক্ষা করছেন রোগীরা। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নত চিকিৎসার মূল্যবান যন্ত্রপাতি কেনা হলেও টেকনোলজিস্টদের অভাবে অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার মালামাল। সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকাবাসী। এ অবস্থায় তিস্তা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলের দরিদ্রপীড়িত এলাকার মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ধুঁকে ধুঁকে চলছে চিকিৎসাসেবা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ৩১ শয্যার এই হাসপাতালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার লক্ষ্যে ২০১০ সালে সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় নতুন ভবনসহ নানা অবকাঠামো। এজন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটারসহ বেশ কিছু মূল্যবান যন্ত্রপাতিও। প্রায় দেড় কোটি টাকায় ২০১৬ সালে অত্যাধুনিক মানের এক্স-রে মেশিন সরবরাহ করা হলেও আজ পর্যন্ত তা চালু করা সম্ভব হয়নি।

একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফার) না থাকায় পড়ে আছে যন্ত্রটি। মেশিন ও টেকনোলজিস্ট না থাকায় হয় না আল্টাসনোগ্রাম পরীক্ষাও। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় নষ্টের পথে ল্যাবের অধিকাংশ সরঞ্জাম। সহকারী ছাড়াই একজন সার্জন দিয়ে দন্ত বিভাগ চালু থাকলেও দুই মাস আগে চিকিৎসক বদলি হওয়ায় এখন সেটিও পুরোপুরি বন্ধ করে যাবতীয় যন্ত্রাংশ রংপুরে নিয়ে গেছে। হাসপাতালের বহির্বিভাগে গড়ে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ জন এবং জরুরি বিভাগে গড়ে ৩৫-৪০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন।

এ ছাড়া গড়ে প্রতিদিন ১৫ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা হয়। উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের হরিচরন গ্রামের  সামছুল হক জানান, হাসপাতালের বাইরে থেকে এক্স-রে ও আল্টাসনোগ্রাম করতে গিয়ে তাকে ১২০০ টাকা গুনতে হয়েছে। টেপামধুপুর ইউনিয়নের ভায়ারহাট (নয়াবাজার) গ্রামের  জহুরুল ইসলাম জানান, চিকিৎসক তিনটি পরীক্ষার কথা বলেছেন এতে তার খরচ হয়েছে ১৩০০ টাকা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মীর হোসেনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, চিকিৎসক ও নার্স সংকট না থাকলেও টেকনোলজিস্টদের সংকট রয়েছে।

তিনি বলেন, টেকনোলজিস্ট কাউনিয়ায় চাকরি কিন্তু ডেপুটেশনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থাকায় মেশিনগুলো চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেকবার এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হলেও কোনো ব্যবস্থা হয়নি। হাসপাতালে গাইনি ও সার্জারি কনসালটেন্ট আছেন। প্রসূতিদের সিজারসহ পুরুষদের হাইড্রোসিল ও বিভিন্ন অপারেশন কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা আগের তুলনায় এখন বেশ উন্নত। 

আমিরুল/বকুল 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়