শান্তিরক্ষী মিশনে নিহত কর্পোরাল মাসুদের মরদেহের অপেক্ষায় স্বজনরা
নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাসুদ রানার মরদেহবাহী হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে
সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন নাটোরের লালপুর উপজেলার বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের সন্তান মাসুদ রানা। দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই কর্পোরালকে শেষবারের মতো এক নজর দেখতে অধীর অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাসুদ রানার মরদেহ বহনকারী হেলিকপ্টার তার গ্রামের বাড়ি-সংলগ্ন করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরণের কথা ছিল। দুপুর ১২টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার মরদেহ পৌঁছায়নি। মরদেহ আসার পর যথাযথ সামরিক মর্যাদায় তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে করে মাসুদ রানাসহ শহীদ ছয় শান্তিরক্ষীর মরদেহ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছানোর খবরে শহীদ মাসুদের গ্রামের বাড়িতে আসতে শুরু করেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
নিহতের মেজো ভাই মনিরুল ইসলাম জানান, আজ সকালে ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর হেলিকপ্টারযোগে শহীদ মাসুদ রানার মরদেহ আনা হবে গ্রামে। মরদেহ পৌঁছানোর পর দ্বিতীয় জানাজা শেষে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।
মরদেহ বহনকারী হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য গ্রামের বাড়ি-সংলগ্ন করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠটি ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। রবিবার সকাল থেকেই সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে অস্থায়ী হেলিপ্যাড নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেন।
ফায়ার সার্ভিসের লালপুর ইউনিটের লিডার আব্দুল করিম বলেন, “বৈরী আবহাওয়া কারণে দেরি হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, দুপুর ২টা নাগাদ হেলিকপ্টারযোগে মরদেহ করিমপুর উচ্চ মাঠে অবতরণ করবে।”
মাসুদ রানা লালপুর উপজেলার আরবাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত সাহার উদ্দিনের বড় ছেলে। ২০০৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। দীর্ঘ ১৯ বছর তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। মাসুদ রানার মেজো ভাই মনিরুল ইসলাম এবং ছোট ভাই রনি আলমও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গর্বিত সদস্য।
স্বজনরা জানান, গত ৭ নভেম্বর স্ত্রী ও আট বছরের একমাত্র মেয়ে মাগফিরাতুল মাওয়া আমিনাকে রেখে শান্তিরক্ষা মিশনে যোগ দিতে সুদান যান মাসুদ রানা। মিশন শুরুর মাত্র এক মাস সাত দিনের মাথায় গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় তিনি শহীদ হন।
ঢাকা/আরিফুল/মাসুদ