ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মিয়ামিতে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৭, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১২:১০, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
মিয়ামিতে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যখন রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে ওয়াশিংটনকে আহ্বান জানাচ্ছেন, ঠিক তখনই যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি শহরে রাশিয়া ও মার্কিন আলোচকরা বৈঠকে বসেছেন। 

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিশেষ দূত কিরিল দিমিত্রিভ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও তার জামাতা জ্যারেড কুশনার বৈঠকে অংশ নেন।

আরো পড়ুন:

রবিবার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা। 

দিমিত্রিভ সাংবাদিকদের জানান, আলোচনা ‘ইতিবাচক ও গঠনমূলক’ হচ্ছে। এই আলোচনা রবিবারও চলবে। 

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি জানান, যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে, তবে এখনো অনেক পথ বাকি। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই মাসের মধ্যেই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে।

ট্রাম্পের প্রতিনিধিরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনীয়, রুশ এবং ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি ২০-দফা শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছেন।

যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তারা অগ্রগতি অর্জন করেছেন, কিন্তু ইউক্রেনের ভূখণ্ড ও সম্ভাব্য নিরাপত্তা গ্যারান্টির মতো বিষয়গুলোতে বড় মতভেদ রয়ে গেছে, যা কিয়েভ যেকোনো চুক্তির জন্য অপরিহার্য বলে মনে করে।

অন্যদিকে, রাশিয়া তাদের দখলকৃত ভূখণ্ড ছাড়ার বিষয়ে কোনো নমনীয়তার ইঙ্গিত দেয়নি। বরং তারা মনে করছে, যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।

জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের এই মধ্যস্থতাকে সমর্থন করলেও স্পষ্ট করে বলেছেন, কেবল কূটনীতি যথেষ্ট নয়, রাশিয়ার ওপর কঠোর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রকে স্পষ্টভাবে বলতে হবে, যদি কূটনীতি না হয়, তাহলে পূর্ণ চাপ থাকবে...পুতিন এখনো যে ধরনের চাপ থাকা উচিত তা অনুভব করেননি।”

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আরো জানান, ওয়াশিংটন থেকে একটি নতুন ত্রিপক্ষীয় ফরম্যাটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যেখানে ইউক্রেন, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা সরাসরি আলোচনা করবেন।

কিন্তু এতে ‘নতুন কিছু হবে’ বলে মনে করছেন না জেলেনস্কি। তিনি জানান, তিনি এই ত্রিপক্ষীয় আলোচনাকে সমর্থন করবেন যদি এর মাধ্যমে বন্দিবিনিময় বা রাষ্ট্রপ্রধানদের পর্যায়ে বৈঠকের মতো কোনো সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি হয়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, “এই ধরনের বৈঠক যুদ্ধবন্দীদের বিনিময়ের জন্য এখনই অনুষ্ঠিত হতে পারে, অথবা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের বৈঠক যদি সরকার প্রধানদের বৈঠকের বিষয়ে একমত হয়... তাহলে আমরা এর বিপক্ষে যাব না। আমরা এই ধরনের মার্কিন প্রস্তাবকে সমর্থন করব। দেখা যাক পরিস্থিতি কেমন হয়।” 

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন শুক্রবার মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়ার পর মায়ামিতে এই আলোচনা শুরু হয়।

এদিকে, আলোচনা চললেও যুদ্ধক্ষেত্রে উত্তেজনা কমেনি। ইউক্রেনের ওডেসার বন্দর এলাকায় রাশিয়ার সর্বশেষ হামলায় ৮ জন নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছেন। একটি যাত্রীবাহী বাসও এই হামলার শিকার হয়।

অন্যদিকে, ইউক্রেন দাবি করেছে, শনিবার তারা ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার দুটি যুদ্ধবিমান এবং কাস্পিয়ান সাগরে একটি তেলের ট্যাংকার ও টহল জাহাজে সফলভাবে আঘাত হেনেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়