ঢাকা     বুধবার   ০৮ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

মাগুরায় সাকিব মনোনয়ন পাওয়ার গুঞ্জনে দোলাচলে আ.লীগ নেতারা

মাগুরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৩, ২৫ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৭:০১, ২৫ নভেম্বর ২০২৩
মাগুরায় সাকিব মনোনয়ন পাওয়ার গুঞ্জনে দোলাচলে আ.লীগ নেতারা

সাকিব আল হাসাস। ফাইল ফটো

মাগুরার দুটি সংসদীয় আসনের একটি থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান বলে তথ্য চাউর হয়েছে। এমন খবরে চরম হতাশা বিরাজ করছে জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে। বিশেষ করে ঢাকার চারটি শীর্ষ দৈনিকে মাগুরা-১ আসনে সাকিব আল হাসানের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে বলে খবর প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার জন্ম হয়েছে। 

গতকাল শুক্রবার আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব মাগুরা-১ এবং চিত্রনায়ক ফেরদৌস ঢাকা-১০ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। 

মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, মাগুরা-১ আসন থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওায়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, সাকিব আল হাসান, সাবেক সংসদ সদস্য এটিএম আব্দুল ওয়াহ্হাব, এসএম শফিকুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রানা আমীর ওসমান, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মিরুল ইসলাম, ইসমত আরা হ্যাপি, কুতুবুল্লাহ কুটি মিয়া, আব্দুল্লাহ খান রনি ও পঙ্কজ রায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। 

সাকিব আল হাসান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহের পর মাগুরায় দুটি আসনের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ লোাকজনের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। গত সংসদ নির্বাচনের সময় থেকেই সাকিবের রাজনীতিতে আসার খবর চাউর হয়। ২০১৮ সালেও তিনি মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কেনার আগ্রহ দেখিয়েও শেষ মুহূর্তে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নেন। 

সাকিবের পক্ষে তার একজন প্রতিনিধি গত শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। এরপরই মাগুরায় রাজনীতির মাঠে নতুন আলোচনার জন্ম দেন তিনি। সাকিবের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে নানা প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য করেন অনেকে। জেলার দুটি আসনের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কেউ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে সতর্ক থাকছেন কেউ আবার রাখঢাক ছাড়াই কথাই বলছেন।

মাগুরা আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, সাকিবকে তারা কখনো স্থানীয় রাজনীতি বা এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে দেখেননি। তবে মনোনয়নের বিষয়ে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই শেষ কথা। তবে, এ বিষয়ে সাকিবের পরিবারের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ফাত্তাহ বলেন, জেলায় আমরা রাজনীতির পরীক্ষিত মানুষদেরকেই এমপি হিসেবে দেখতে চাই। হঠাৎ করে কাউকে চাপিয়ে দিলে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। তারা সবসময় যাদের সহজে কাছে পেয়েছেন তাদেরকেই ভোট দিতে পছন্দ করেন। এটাই প্রকৃত বাস্তবতা। 

আওয়ামী লীগের জেলা শ্রম ও বাণিজ্য ষিষয়ক সম্পাদক মাজেদুল হক ঝন্টু বলেন, সাকিব ক্রিকেটে ভালো। জেলার রাজনৈতিতে তার কোনো অবস্থান ছিল না, এখনো নেই। তিনি জেলায় লুকিয়ে আসেন লুকিয়ে চলে যান। কেউ তাকে দেখতে গেলে তিনি বিরক্ত হন। জেলার সাংবাদিকদের পর্যন্ত এড়িয়ে চলেন। এ ধরনের তারকাদের জন্যে রাজনীতি নয়। 

জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল ইসলাম বিপু বলেন, সাকিবের জেলার মানুষের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই। নির্বাচন এলে অনেককেই মনোনয়ন কিনতে দেখছি। কিন্তু আমরা যারা জেলার রাজনীতির সঙ্গে আছি কোনোদিন সামান্য কুশল বিনিময় করতে দেখিনি। 

জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান বলেন, সাকিব দলীয় মনোয়ন চেয়েছেন। মাগুরার ক’জন মানুষের নাম তিনি বলতে পারবেন সেটা আমাদের জানা নেই। 

মাগুরা -১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর সাংবাদিকদের জানান, এখন অনেক প্রার্থীর নাম অনেকভাবে শোনা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত পর্যায়ে এই প্রার্থী তালিকায় রদবদল আনতে পারেন। রোববার চূড়ান্ত ঘোষণার আগ পর্যন্ত এ নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে, বিগত সময়ের উন্নয়ন ও দলকে সংগঠিত করে পরিচালনার দক্ষতার বিষয়টি বিবেচনায় আনবে মনোনয়ন বোর্ড এটি আমি বিশ্বাস করি।

মনোনয়ন সংগ্রহ ও মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে সাকিব আল হাসানের বাবা সাবেক ফুটবলার মাশরুর রেজা কুটিল কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

শাহীন/মাসুদ

ঘটনাপ্রবাহ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়