ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

খাস পুকুর শুধু সেচের কাজে ব্যবহারের দাবি

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২২, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
খাস পুকুর শুধু সেচের কাজে ব্যবহারের দাবি

রাজশাহীতে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ‘এক্সটেন্ডেড কমিউনিটি ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রজেক্ট-ড্রট (ইসিসিসিপি-ড্রট)’ প্রকল্পের অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অনেকে বরেন্দ্র অঞ্চলের ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমাতে সরকারি খাস পুকুরগুলো শুধু সেচ কাজের জন্যই ইজারা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এখন এসব পুকুর ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করা হয়। সেচকাজে ব্যবহার হয় না।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী নগরীর একটি তিন তারকা হোটেলে পিকেএসএফ এ কর্মশালার আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নিয়ে মতামত তুলে ধরেন। তারা বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে ৩৩ হাজার পুকুর রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এসব পুকুর ইজারা দেয় এবং এতে মাছচাষ করা হয়। সাধারণ চাষিরা এসব পুকুর সেচকাজের জন্য ব্যবহার করতে পারে না। ফলে চাষাবাদের জন্য ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলতে হয়। ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমাতে হলে সরকারি খাস পুকুরগুলো মাছচাষের জন্য ইজারা বন্ধ করতে হবে।

অংশগ্রহণকারীরা আরও বলেন, ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে সেচকাজে প্রচুর পানির অপচয় হয়। এ অপচয় বন্ধে বিএমডিএকে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি মাছ চাষের জন্য সরকারি খাস পুকুর ইজারা দেয়া বন্ধ করতে হবে। শুধু সেচকাজের জন্য ইজারা দিতে হবে। পাশাপাশি ভূ-গর্ভস্থ পানির পুনর্ভরণে ভবন নির্মাণের সময়ে প্রতিটি ভবনের ছাদে বৃষ্টির পানি ভূ-গর্ভে পাঠানোর ব্যবস্থা করা বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান।

কর্মশালায় প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পিকেএসএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি ছাদেক আহমাদ। তিনি জানান, জলবায়ু তহবিলের অর্থায়নে বরেন্দ্র অঞ্চলের তিনটি জেলা- নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং রাজশাহীর ১৪টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। বরেন্দ্র অঞ্চলের ভূ-গর্ভস্থ পানির পুনর্ভরণ চার বছর মেয়াদী এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এ ছাড়া পুকুর ও খাল পুনঃখনন এবং খরা সহিষ্ণু ফসলের চাষ সম্প্রসারণ করা হবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে। কর্মশালায় বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) তাদের এলাকার পানির সমস্যার কথা তুলে ধরেন। চাষাবাদে চাহিদামতো পানি দেয়া যাচ্ছে না বলে তারা জানান।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. নমিতা হালদার। তিনি বলেন, ‘সেচের পানির জন্য এ বরেন্দ্র অঞ্চলের গোদাগাড়ীতে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার দুই কৃষক আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তারা দুই ভাই ছিলেন। তাদের আত্মহত্যার পেছনে অন্যান্য সামাজিক কারণও থাকতে পারে। কিন্তু যখন পানির জন্য আত্মহত্যা বলা হয়, তখন সংকটের ব্যাপারে ভাবতে হয়। এ জন্যই আমরা ভাবছি। বরেন্দ্র অঞ্চলের ভূ-গর্ভস্থ পানির পুনর্ভরণে জলবায়ু তহবিল অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। এটা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন যেন স্বচ্ছভাবে কাজটা করে উদ্দেশ্য সাধন করা যায়।’ 

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। কর্মশালায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, পিকেএসএফের সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া নওগাঁ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।

কেয়া/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়