ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

টেবিল দখল নিয়ে শজিমেক ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৮

বগুড়া প্রতি‌নি‌ধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪০, ২ মে ২০২৪  
টেবিল দখল নিয়ে শজিমেক ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৮

বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজে (শজিমেক) পড়ার টেবিল দখল করা নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ জন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২ মে) এ ঘটনায় একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় অধ্যাপক নিতাই চন্দ্র সরকারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মেডিক্যাল কলেজ প্রশাসন।

আরো পড়ুন:

কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী (৩০তম ব্যাচ) রিদওয়ান হক, একই ব্যাচের তালহা, নাদিম ও আরিফ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শৈশব রায়ের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে সীমান্ত, আলী হাসান, ইসমাম ও অর্পণ নিলয়কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া দুই পক্ষের অন্তত ৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এই সংঘর্ষে শজিমেক’র ছাত্রাবাসের অন্তত সাতটি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। এরআগে গতকাল বুধবার রাত ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ হয়।

আহতদের নাম পরিচয় নিশ্চিত করে মেডিক্যাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনিসুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। অধ্যক্ষের নির্দেশে ৩ জন শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের কাছে জানা গেছে, তৃতীয় বর্ষের (৩১ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ফুয়াদ ছাত্রলীগ সভাপতি শৈশব রায়ের অনুসারী। একই ব্যাচের আলী হাসান সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। গত মঙ্গলবার এই দুই গ্রুপের ছাত্রদের মধ্যে একটি পড়ার টেবিল দখলকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার জের ধরে বুধবার রাতে ফুয়াদ তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে আলী হাসানের কাছে থাকা পড়ার টেবিলটি নিতে গেলে দুই পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরে সংঘর্ষের রেশ পুরো ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে।

এক পর্যায়ে খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. রেজাউল আলম ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের লক্ষ করেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে বিবাদমান ছাত্ররা। এসময় অধ্যক্ষের নির্দেশে মোফাজ্জলের অনুসারী ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল, ছাত্রলীগ কর্মী মোহাইমিন রাইম ও সীমান্তকে পুলিশ আটক করে। ছাত্রাবাসের বাহিরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

এ বিষয়ে শজিমেক কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বর্তমান সভাপতি শৈশব রায়ের দিকে অভিযোগ তুলে বলেন, শৈশব রায়ের নির্দেশে তার অনুসারি ছাত্রলীগের একাংশ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর আকস্মিকভাবে হামলা চালিয়েছে। তারা কলেজের ছাত্রাবাসের পাঁচটি কক্ষ ভাঙচুর করেছেন। এতে শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিল, ল্যাপটপ, ফ্রিজ ছাড়াও ঘরের আসবাব নষ্ট হয়।

অভিযোগ অস্বীকার করে সহ-সভাপতি অর্ঘ্য রায় বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। হোস্টেলে একটি পড়ার টেবিল নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দুই পক্ষ হয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়িয়েছেন। কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেনের অনুসারিরা ক্যাম্পাসে আগের মতো সংঘাত সৃষ্টি করার পায়তারা করছে। এ হামলার সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়। কলেজ প্রশাসনের তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে।

কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শৈশব রায় বলেন, পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বর্তমানে সিলেটে আছি। একটি টেবিল দখলকে কেন্দ্র করে কিছু দুষ্ট প্রকৃতির শিক্ষার্থীরা বিনা উসকানিতে আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আহত করেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করতে জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে।

অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. রেজাউল আলম বলেন, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অধ্যাপক নিতাই চন্দ্র সরকারকে। আগামি সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনাম/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়