ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নির্মল সেনের ৯৪তম জন্মবার্ষিকী আজ 

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৪, ৩ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ১১:৩৬, ৩ আগস্ট ২০২৪
নির্মল সেনের ৯৪তম জন্মবার্ষিকী আজ 

বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, বাম রাজনীতির পুরোধা, মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক নির্মল সেনের ৯৪তম জন্মবার্ষিকী আজ। দিনটি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় নানা কর্মসূচিতে পালিত হচ্ছে। নির্মল সেন স্মৃতি সংসদ ও নির্মল সেন স্কুল অ্যান্ড মহিলা কলেজ এসব কর্মসূচি পালন করছে।

১৯৩০ সালের ৩ আগস্ট তিনি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামে এক সম্ভ্রন্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সেন গুপ্ত। মায়ের নাম লাবণ্য প্রভা সেন গুপ্ত। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নির্মল সেন ছিলেন পঞ্চম।

নির্মল সেনের ৯৪তম জন্মদিন উপলক্ষে নির্মল সেন স্মৃতি সংসদ ও নির্মল সেন স্কুল অ্যান্ড মহিলা কলেজের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

নির্মল সেনের বাবা সুরেন্দ্র নাথ সেন গুপ্ত কোটালীপাড়ার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ সরকারি কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনষ্টিটিউশনের গণিত শিক্ষক ছিলেন। এর আগে সুরেন্দ্র নাথ সেন গুপ্ত ঢাকার ইস্ট বেঙ্গল ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করতেন। দেশ বিভক্তির পরে নির্মল সেনের বাবা-মা অন্য ভাই বোনদের সঙ্গে নিয়ে কলকাতা চলে যান। জন্মভূমির প্রতি অকুন্ঠ ভালবাসার কারণে তিনি এদেশে থেকে যান। নির্মল সেন বড় হয়েছেন ঝালকাঠি জেলায় তার পিসির বাড়িতে।

নির্মল সেন ঝালকাঠি জেলার কলসকাঠি বিএম একাডেমি থেকে ১৯৪৪ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে ম্যাট্রিক পাস করেন। পিসির বাড়িতে যাওয়ার আগে নির্মল সেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জিটি স্কুলে ৪র্থ শ্রেণিতে এক বছর লেখাপড়া করেন। তিনি বরিশাল বিএম কলেজ থেকে আইএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি এ ও মাষ্টার্স পাস করেন।

নির্মল সেনের স্কুল জীবনে ’ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। কলেজ জীবনে তিনি অনুশীলন সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আরএসপিতে যোগ দেন। তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। এরপর তিনি দীর্ঘ দিন শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রাজনীতি করতে গিয়ে নির্মল সেনকে জীবনের অনেকটা সময় জেলে কাটাতে হয়েছে।

১৯৬১ সালে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার মধ্যে দিয়ে নির্মল সেন তার সাংবাদিকতার জীবন শুরু করেন। তার পর দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। তিনি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিষয়ে অতিথি শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন।

লেখক হিসেবেও নির্মল সেনের যথেষ্ট সুনাম রযেছে। তার লেখা- পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ, মানুষ সমাজ রাস্ট্র, বার্লিন থেকে মষ্কো, মা জন্মভূমি, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই, আমার জীবনে ৭১এর যুদ্ধ, আমার জবানবন্দি- উল্লেখযোগ্য।

নির্মল সেন ২০০৩ সালে ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এর পর দেশে বিদেশে অনেক চিকিৎসার পরে ২০১৩ সালে ৮ জানুয়ারি পরলোকগমন করেন। নির্মল সেনের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দান করা হয়।

নির্মল সেন স্মৃতি সংসদের সভাপতি সাংবাদিক মিজানুর রহমান বুলু বলেন, আমাদের সংগঠন ও নির্মল সেন স্কুল অ্যান্ড মহিলা কলেজের পক্ষ থেকে নির্মল সেনের জন্মদিন পালন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দিবসের প্রথম প্রহরে নির্মল সেনের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যে দিয়ে আমাদের দিনের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এরপর আলোচনা সভার মধ্যে দিয়ে আমাদের কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটবে। 

বাদল/টিপু

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়