প্রবল পানির চাপে ভেঙে পড়েছে বেত্রাবতীর বিকল্প সেতু
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
প্রবল পানির চাপে সাতক্ষীরার কলারোয়ার বেত্রাবতী নদীর উপর নির্মিত বিকল্প সেতুটি ভেঙে পড়েছে। ফলে ফলে কলারোয়া সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ছয়টি ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক বাসিন্দার। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই প্রবল পানির চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
সাতক্ষীরা সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আনোয়ার পারভেজ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কলারোয়ার বাজার এলাকায় নতুন করে বেইলি সেতুর কাজ আজ (শুক্রবার) শুরু হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ভেঙে যায় সেতুটি।
সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় কলারোয়া বাজার এলাকায় বেত্রাবতী নদীর ওপরের সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৪৮ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থের সেতুটি নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। কাজটি পায় মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর। সময় শেষ হওয়ার পরও কাজ শেষ হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, কলারোয়া সদরের সাথে জালালাবাদ, জয়নগর, দেয়াড়া, যুগিখালী, কয়লা ও পৌরসভার ২টি ওয়ার্ডের সাথে মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বেত্রাবতী নদীর উপর নির্মিত ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় নতুন ব্রিজ নির্মাণের টেন্ডার হয়। টেন্ডারের পর ব্রিজটি ভেঙে ফেলে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এদিকে মানুষের যোগাযোগের জন্য তার পাশে একটি বিকল্প ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কয়েক দিনের টানা অতি বৃষ্টির কারণে নদীতে পানি বাড়ার ফলে পানির প্রবল চাপে সে ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে।
কলারোয়া উপজেলার বাসিন্দা আসাদুজ্জামন আসাদ ও মো.সোহবার হোসেনসহ একধিক স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, কলারোয়া সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কলারোয়া উপজেলা পরিষদ, কলারোয়া থানা, স্কুল কলেজ, কলারোয়া পৌরসভা অফিসসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে আসতে পারছেন না সাধারন মানুষ। এর ফলে থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। তাই তারা অবিলম্বে ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
কলারোয়ার জালালবাদ গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, সেতু ভেঙে পড়ায় এখন আর তারা উপজেলা সদরে যেতে পারছেন না। অথচ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা পরিষদ, থানা, স্কুল-কলেজ, কলারোয়া পৌরসভাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান নদীর এ পাড়ে।
তিনি আরও জানান, চার বছর আগে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরণা দিয়েও লাভ হয়নি। এবার তো বিকল্প সেতুও ভেঙে পড়েছে।
কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জহুরুল ইসলাম জানান, ওই ব্রিজ নির্মাণের কাজটি যেহেতু ইঞ্জিনিয়াররা করবেন সে কারণে আমি এলজিইডির কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
সাতক্ষীরা সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার পারভেজ জানান, কলারোয়ার বাজার এলাকায় ভেঙে পড়া সেতুটি দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে নতুন করে বেইলি সেতু করতে হবে। আশা করছেন আজ (শুক্রবার) থেকে কাজ শুরু হবে।
শাহীন/টিপু