ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৫ মে ২০২৫ ||  জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩২

নোয়াখালীর মাদরাসায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা 

নোয়াখালী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৫০, ৩০ এপ্রিল ২০২৫  
নোয়াখালীর মাদরাসায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা 

ফাইল ফটো

নোয়াখালীর সদর উপজেলার একটি মাদরাসায় জোবায়ের ইবনে জিদান (১২) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৫টার দিকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মাদরাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই শিক্ষার্থী মাদরাসার শৌচাগারে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। জিদানের মা সাবরিনা খাতুনের অভিযোগ, নির্যাতন করে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।  

মারা যাওয়া জিদান উপজেলার নোয়াখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহব্বতপুর কাঞ্চন মেম্বারের পোল সংলগ্ন তানজিরুল কোরআন সোবহানিয়া মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল। সে নোয়াখালী ইউনিয়নের মধ্য চর উরিয়া গ্রামের ফজল মিস্ত্রি বাড়ির ওমান প্রবাসী আমিরুল ইসলাম সোহেলের ছেলে।

আরো পড়ুন:

মারা যাওয়া জিদানের মা সাবরিনা খাতুন বলেন, “আমার এক ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে জিদান তানজিরুল কোরআন সোবহানিয়া মাদরাসার হিফজ বিভাগে আবাসিকে থেকে পড়ালেখা করত। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলের দিকে নাতিকে দেখতে মাদরাসায় যান ওর দাদা মো. নুরুল হক বাবুল। তিনি দেখেন, তার নাতি বমি করছে। তখন মাদরাসার মুতামিম আফজাল হোসাইন জিদানের দাদাকে জানান, আপনার নাতি পড়েলেখা পারে না। এজন্য শাস্তি দিয়েছি, দেখেন।”

তিনি বলেন, ‍“আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মাদরাসার মুতামিম ফোন করে আমাকে জানান, আপনারা দ্রুত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে যান। আপনার ছেলে মাদরাসায় গলায় ফাঁস দিয়েছে।” 

সাবরিনা খাতুনের অভিযোগ, “মাদরাসার শিক্ষকরা আমার ছেলেকে হত্যা করে। এরপর ফাঁসির নাটক সাজায়। তারা আমার ছেলেকে এর আগেও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে।”  

তানজিরুল কোরআন সোবহানিয়া মাদরাসার মুতামিম আফজাল হোসাইন অভিযোগ নাকচ করে বলেন, “ওই ছাত্র বিকেলের দিকে মাদরাসার শৌচাগারে যায়। এ সময় আরো দুইজন ছাত্র শৌচাগারে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিল। সেখানে জিদান পায়জামার সঙ্গে থাকা নেয়ার (রশি) দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। বাইরে থাকা ছাত্ররা শৌচাগারে ঢুকতে দরজা ধাক্কাধাক্কি করে। দরজা খুলে গেলে তারা জিদানের মরদেহ দেখে আমাদের জানায়।”

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার মো. শাহরিয়ার বলেন, “ফাঁস হলে পিছনের দিকে দাগ থাকার কথা না। ফাঁসের বিষয় হলে পিছনে দাগ থাকত না। আমি প্রাথমিক অবস্থায় জিদানের গলার পিছনের দিকে দাগ দেখতে পেয়েছি। তাই প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা মনে হচ্ছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।”  

সুধারাম মডেল থানার ওসি মো.কামরুল ইসলাম বলেন, “পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। মাদরাসায় থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/সুজন/মাসুদ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়