ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কালীগঞ্জ পৌরসভা

দেড় যুগেও গড়ে ওঠেনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশ

রফিক সরকার, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪৮, ৫ আগস্ট ২০২৫  
দেড় যুগেও গড়ে ওঠেনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশ

প্রতিষ্ঠার প্রায় ১৫ বছর পার হলেও গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভায় এখনো গড়ে ওঠেনি একটি আধুনিক ও পরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। রাজধানীর খুব কাছে অবস্থিত হলেও এই পৌরসভার মানুষ প্রতিদিনই ভুগছেন দুর্গন্ধ, পরিবেশ দূষণ এবং স্বাস্থ্য হুমকিতে পড়ার মতো সমস্যায়। পৌরসভার নিজস্ব জায়গায় দ্রুত ডাম্পিং জোন তৈরি করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে যাত্রা শুরু করে কালীগঞ্জ পৌরসভা। ২০১৪ সালে এটি উন্নীত হয় ‘খ’ শ্রেণিতে। বর্তমানে পৌরসভার আয়তন ১৫.৮১ কিলোমিটার, জনসংখ্যা ৬০ হাজার ৫৭২ জন এবং ভোটার সংখ্যা ৪৫ হাজার ৩৮৯ জন। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ পৌর এলাকায় নেই কোনো নির্দিষ্ট বর্জ্য ডাম্পিং স্পট।

আরো পড়ুন:

সরেজমিন দেখা গেছে, বাসাবাড়ি, দোকান, হোটেল, এমনকি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বর্জ্যও যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে। পরে সেসব আবর্জনা পৌরসভার পিকআপ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বালীগাঁও এলাকার একটি খোলা জায়গায়। ওই স্থানটিই এখন পৌরসভার অনানুষ্ঠানিক ভাগাড় হিসেবে পরিচিত। গন্ধ এতটাই তীব্র যে, পথচারীদের নাক চেপে হাঁটতে হয়। 

এমন বাস্তবতায় উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশবিদরাও। বিডিক্লিন কালীগঞ্জ শাখার উপ-সমন্বয়ক ইশতিয়াক ফয়সাল বলেন, “খোলা জায়গায় বর্জ্য ফেলা যেমন পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতি, তেমনি জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়ছে। পৌরসভার নিজস্ব জায়গায় দ্রুত ডাম্পিং জোন তৈরি করা জরুরি।”

জনস্বাস্থ্যেও এর গুরুতর প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, “এভাবে বর্জ্য ফেলার কারণে বাতাসে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে, যা হাঁপানি, ফুসফুসের রোগ এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। পেটের সমস্যাসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগ ছড়ায়। জলাবদ্ধতার কারণও হয়ে উঠছে এসব বর্জ্য।”

এ অবস্থার মধ্যেই বর্জ্যভিত্তিক একটি অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানও গড়ে উঠেছে বালীগাঁও এলাকায়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দরিদ্র টোকাইরা সেখানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংগ্রহ করছেন পুনর্ব্যবহারযোগ্য দ্রব্য। কেউ কেউ নিয়মিত মজুরি ভিত্তিতে কাজ করছেন ভাগাড় ঘিরে।

পৌরসভার পক্ষ থেকে অবশ্য আশ্বাস দেওয়া হয়েছে পরিবর্তনের। কালীগঞ্জ পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ বলেন, “বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরা কাজ করছি। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আধুনিক ডাম্পিং স্পট গড়ার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই শহরের চিত্র পাল্টে যাবে।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়