বেনাপোলের সেই রাজস্ব কর্মকর্তা বহিষ্কার
নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর || রাইজিংবিডি.কম
বেনাপোলের কাস্টমস কর্মকর্তা শামীমা আক্তারকে গ্রেপ্তার করে যশোরের দুদক কর্মকর্তারা। ফাইল ফটো।
বাইরে থেকে সহকারী নিয়োগ করে তার মাধ্যমে বেপরোয়াভাবে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বেনাপোল কাস্টমস হাউসের আলোচিত রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের শুল্ক-১ শাখা থেকে সোমবার (১৪ অক্টোবর) এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০২৫ সালের ৭ অক্টোবর যশোরের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় শামীমা আক্তারকে গ্রেপ্তার করে। সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ৩৯(২) ধারা অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা সমীচীন মনে করে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শামীমা আক্তারের বরখাস্তের তারিখ ৭ অক্টোবর থেকে কার্যকর ধরা হবে জানিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বরখাস্তকালীন তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারি করা এ প্রজ্ঞাপনে সই করেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খান।
প্রজ্ঞাপনটি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও কর্মকর্তাদের অবগতির জন্য পাঠানো হয়েছে।
এই সেই রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা, যিনি ঘুষ নেওয়ার সুবিধার্থে সহকারী হিসেবে স্থানীয় একটি এনজিও কর্মী হাসিবুর রহমানকে নিয়োগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে ঘুষের টাকাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে দুদক।
দুজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে বেনাপোল বন্দর থানায় মামলা হয়। হাসিবুর রহমানের কাছ থেকে উদ্ধার করা টাকা জব্দ দেখানো হয়।
দুদকের অভিযোগ, রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমদানি পণ্যের শুল্ক মওকুফ করে দিয়ে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের কাছ থেকে নিয়মিত ঘুষ নিতেন। এ কাজে তাকে সহায়তা করতেন হাসিবুর রহমান।
অভিযানের সময় দুদক তথ্য পেয়েছিল যে, শামীমা আক্তারের হয়ে নিয়মিত ঘুষের টাকা সংগ্রহ করতেন হাসিবুর রহমান। সেই টাকা মোবাইলে আর্থিক সেবা দেওয়া এক এজেন্টের দোকানে রেখে দিতেন তিনি। পরে ওই রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে পৌঁছে দিতেন।
কাস্টম হাউসের ফটকের কাছে ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ঘুষের অর্থসহ হাসিবুর রহমানকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে দুদকের আভিযানিক দল। পরে তাকে বেনাপোল বন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়।