রাত পোহালে রাবির দ্বাদশ সমাবর্তন, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা
ফাহমিদুর রহমান ফাহিম, রাবি || রাইজিংবিডি.কম
সমাবর্তন উপলক্ষে রঙে-বর্ণে সেজেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। মঙ্গলবার তোলা। ছবি: রাইজিংবিডি ডটকম।
সব বাধা কটিয়ে, সব কিছু গুছিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দ্বাদশ সমাবর্তনের মহা আয়োজন পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর)। সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে; তবে সমাবর্তন গ্রাজুয়েটদের সুবিধার জন্য এবং শৃৃঙ্খলার স্বার্থে একগুচ্ছ নির্দেশনা জানিয়ে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এবারের সমাবর্তনে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জনকারী ১২টি অনুষদের মোট ৫ হাজার ৯৬৯ শিক্ষার্থী অংশ নেবেন। আর ৭৯ জনকে পিএইচডি, ১১ জনকে এমফিল এবং ৭৪০ জনকে এমবিবিএস ডিগ্রি দেওয়া হবে।
সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ। বিশেষ অতিথি থাকবেন অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্রাজুয়েটদের সমাবর্তনের গাউন ও ক্যাপসহ কোনো সামগ্রী ফেরত দিতে হবে না, নিবন্ধিত গ্রাজুয়েটদের ১৭ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে নির্ধারিত আসনে উপস্থিত থাকতে হবে।
সমাবর্তনস্থলে প্রবেশের সময় অবশ্যই আইডি কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে, সমাবর্তন চলার সময় শুধু নিবন্ধিত গ্রাজুয়েটরাই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সময় গ্রাজুয়েটদের পরিবারের সদস্যদের প্রবেশের সুযোগ থাকবে।
নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার রক্ষার্থে সমাবেশস্থলের প্রবেশপথে মেটাল ডিটেকটর ও আর্চওয়ের ব্যবস্থা থাকবে। স্টেডিয়ামের পশ্চিম গেট শুধু ভিআইপি ও আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। নিবন্ধিত গ্রাজুয়েটদের পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ গেট ব্যবহার করতে হবে।
নিবন্ধিত গ্রাজুয়েটরা প্রথম বিজ্ঞান ভবন, দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবন ও স্টেডিয়ামের ভেতরের ওয়াশরুমগুলো ব্যবহার করতে পারবেন, নারী গ্রাজুয়েটদের জন্য টিএসসিসি সংরক্ষিত থাকবে। স্টেডিয়ামের ভেতরে পূর্ব পাশে ভ্রাম্যমাণ ওয়াশরুমের ব্যবস্থাও থাকবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন।
গ্রাজুয়েটদের সহায়তার জন্য স্টেডিয়ামের ভেতরে উত্তর-পূর্ব কোণে একটি এবং বাইরে টিএসসিসি বটতলার পূর্ব পাশে একটি হেল্প ডেস্ক থাকবে। এই দুটি হেল্প ডেস্ক একই সঙ্গে লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেবা প্রদান করবে, টিএসসিসির সামনে নিবন্ধিত গ্রাজুয়েটদের সঙ্গে আগত শিশুদের জন্য ফ্যামিলি জোন ও কিডস কর্নার থাকবে, সমাবর্তন চলাকালে উপস্থিত গ্রাজুয়েটদের মোবাইল ফোন সাইলেন্ট মোডে অথবা বন্ধ রাখতে হবে। গ্রাজুয়েটরা চাইলে তাদের সঙ্গে আনা ব্যাগ হেল্প ডেস্কে টোকেনের মাধ্যমে জমা রাখতে পারবেন।
জরুরি চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন হলে স্টেডিয়ামের ভেতরে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত চিকিৎসা ডেস্কে যোগাযোগ করতে হবে। প্রয়োজনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারেও সেবা নেওয়া যাবে, সমাবেশস্থলের বাইরে পূর্ব পাশে দুটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকবে, গাড়ি ও কার পার্কিংয়ের জন্য জুবেরী ভবনের মাঠ এবং শহীদ হবিবুর রহমান হলের মাঠ ব্যবহার করা যাবে।
১৯৫৩ সালে রাবি প্রতিষ্ঠা পায়। সেই থেকে সাত দশকের বেশি সময়ে মাত্র মাত্র ১১টি সমাবর্তন দেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ২০১৯ সালে সর্বশেষ সমাবর্তন করা হয়।তবে দ্বাদশ সমাবর্তন আয়োজন করা নিয়ে মতভিন্নতা ও নানা ইস্যুতে পক্ষ-বিপক্ষ কম হয়নি। একাধিকবার তারিখ পেছানো হয়েছে। শেষপর্যন্ত রাজশাহীর সবুজ মতিহার চত্বরে সমাবর্তনে সমবেত হতে যাচ্ছেন তিন শিক্ষাবর্ষের প্রায় ছয় হাজার গ্রাজুয়েট।
ঢাকা/রাসেল