ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজের সব টিকিট বিক্রি

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০০, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫  
৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজের সব টিকিট বিক্রি

সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণপ্রত্যাশী পর্যটকের চাপ দিন দিন বাড়ছে। কক্সবাজার শহর থেকে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে যাচ্ছেন। মৌসুমের শুরুতে যেখানে দৈনিক পর্যটক ছিল ১২০০ থেকে ১৩৫০ জন, সেখানে এখন আগ্রহ দেখাচ্ছেন অন্তত তিন হাজার মানুষ। তবে, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দৈনিক সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক বহনের সীমা থাকায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব জাহাজের টিকিট আগাম বিক্রি হয়ে গেছে।

জাহাজ কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ডিসেম্বরের ১ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত অন্তত ২১ হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করেছেন। এছাড়া, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বার আউলিয়া, কেয়ারি সিন্দাবাদ ও কেয়ারি ক্রুজের টিকিট আগাম বিক্রি হয়ে গেছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে।

সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ‘‘বছরের শেষ দিন অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব জাহাজের টিকিট আগাম বিক্রি হয়ে গেছে। তবে, কর্ণফুলী জাহাজের আগাম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এছাড়া, ৩১ ডিসেম্বর থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত অন্য তিনটি জাহাজের পঞ্চাশ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।’’

কক্সবাজার হোটেল-গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, ‘‘গত সপ্তাহে কক্সবাজার সৈকতে দেড় থেকে দুই লাখ পর্যটক এসেছিলেন। তাদের অনেকে সেন্ট মার্টিন যেতে চাইলেও আসনসংখ্যা সীমিত থাকায় যেতে পারেননি।’’

সরকার সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে একাধিক নির্দেশনা জারি করেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান চলাচল করতে পারবে না। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে, যেখানে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে।

দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় রাতের বেলায় সৈকতে আলো জ্বালানো, উচ্চ শব্দ, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা কেনাবেচা নিষিদ্ধ। সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল ও সি-বাইকসহ সব মোটরচালিত যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা বলেন, ‘‘সরকারের ১২ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কিউআর কোডযুক্ত টিকিট ছাড়া কাউকে জাহাজে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না এবং দৈনিক দুই হাজারের বেশি পর্যটক যাতায়াত করতে পারবে না। প্লাস্টিক ও পলিথিন বহন নিয়েও জাহাজে ওঠার আগে তদারকি চলছে।’’

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘‘সেন্ট মার্টিন যাতায়াত ও দ্বীপে পর্যটকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণেও ট্যুরিস্ট পুলিশ নজরদারি করছে।’’

উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য সেন্ট মার্টিন দ্বীপ উন্মুক্ত করা হলেও নভেম্বর মাসে রাতযাপনের অনুমতি না থাকায় এবং জাহাজ চলাচল সীমিত থাকায় সে মাসে কার্যত পর্যটক যাননি। চলতি ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের সুযোগ থাকায় ভ্রমণ বেড়েছে।

ঢাকা/তারেকুর/রাজীব

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়