ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মাহবুব আলম চাষী ফার্মের জমি তছরুপে সিন্ডিকেট!

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাহবুব আলম চাষী ফার্মের জমি তছরুপে সিন্ডিকেট!

ফার্মের জমি

নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম, ২৫ ফেব্রুয়ারি : রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান এলাকায় প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী মাহবুব আলম চাষী ফার্মের শত কোটি টাকার জমি নিয়ে বানিজ্যে নেমেছে একটি চক্র।

দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষনীয় বিভিন্ন ফল ফসলসহ বৃক্ষ সমৃদ্ধ এই ফার্মের জমি বিক্রয়ের নামে শতাধিক লোকজনের কাছ থেকে ইতিমধ্যে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই চক্র।

জমি বিক্রয়ের অগ্রিম হিসেবে আগ্রহী ক্রেতা থেকে এসব টাকা গ্রহন করা হয়েছে। সরকারী অনুমতি প্রাপ্তির শর্তে রেজিষ্ট্রি দলিলের মাধ্যমে বিক্রিত জমি হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়েছে।

জানা যায়, বনবিভাগ থেকে চন্দ্রঘোনা মাহবুব আলম চাষী কৃষি ফার্মকে ডি ফরেষ্ট্রির মাধ্যমে  রাঙ্গুনিয়া বনরেঞ্জের কোদালা বিটের আওতাধীন ১ শ’একর জমি ১৯৩৭ সালে বন্দোবস্ত দেয়।

সমবায় সমিতির নিবন্ধনে ১৯৬৫ সালে চাষী ফার্মের যাত্রা শুরু হয়। প্রশাসনিক সরকারী -বসরকারী আমলা ও  প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়ে ৩৮ সদস্যের সমবায় সমিতির পরিচালনায় ক্রমে এটিকে আকর্ষণীয় চাষী ফার্মে পরিনত করা হয়। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদ এবং পরিচালনার ক্ষেত্রে যথাযথ ধারাবাহিকতা রক্ষা না হওয়ায় কালের আবর্তে চাষী ফার্মটি বর্তমানে কার্যক্রমহীন। এ অবস্থাটিকে সুযোগ হিসেবে বেছে নিয়েছে ওই চক্রটি।  

জানা গেছে, কেবল লুটপাটের জন্যই প্রকৃত নিয়ম-বিধি অন্ধকারে রেখে চাষী ফার্মের জমি বিক্রয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের অনুমতি আদায়ের পাঁয়তারা করছে ওই প্রভাবশালী চক্রটি।

সমবায় সমিতির নামে নিবন্ধিত পাহাড় এবং সমতল এলাকা জুড়ে এই চাষী ফার্মের জমিতে লেবু ও অন্যান্য ফলজ এবং বনজ বৃক্ষের বনায়নে এটি ছিল একটি অনুকরণীয় কৃষি শিল্প প্রতিষ্ঠান। উৎপাদিত ফল এবং বৃক্ষে দর্শনীয় এবং লাভজনক প্রতিষ্ঠান।

চাষী ফার্মে এখন থেমে গেছে কর্মকান্ডের চাঞ্চল্য।  বনবাগান উজাড় হয়ে রূপ নিয়েছে ন্যাড়া ভূমিতে। সুযোগে ফার্মের জমি বিকিয়ে কোটি কোটি টাকার বানিজ্যের পাঁয়তারা করে চলছে । এরমধ্যেই ফার্মের ১১ একর জমি অবৈধভাবে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

শেয়ার ক্রয়ের নামে কতিপয় লোকজনের সমন্বয়ে একটি সিন্ডিকেট সৃষ্টি করা হয়েছে। সমিতির পরিচালনা কমিটির নামে ভূয়া রেজুলেশন তৈরি করে জেলা প্রশাসকের নিকট জমি বিক্রির অনুমতির জন্য আবেদন করা হয়েছে। সে সূত্রে ইতিমধ্যে এ ফার্মের জমিতে প্লট বিক্রির ঘোষণা দিয়ে অগ্রিম মূল্য আদায় করা হচ্ছে আগ্রহী ক্রেতার কাছ থেকে।

চাষী ফার্মের বর্তমান কেয়ারটেকার সুনিল দে বলেন, ফার্মের আসল মালিকদের অনেকে এখন আর বেঁচে নেই। তাদের ওয়ারিশদের অনেকে টাকার প্রয়োজনে চাষী ফার্মের জমি বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্তে জেলা প্রশাসকের কাছে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. শাহনেওয়াজ জানান, সমবায়ের নিবন্ধিত ফার্মের জমি বিক্রি বা জমির শ্রেনী পরিবর্তনের সুযোগ নেই। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।  

 

রাইজিংবিডি / রেজাউল করিম / টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়