ঢাকা     রোববার   ১৯ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

রাস্তায় সাইড দেওয়া নিয়ে জাবিতে হাতাহাতি, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১৭, ৬ মে ২০২৪  
রাস্তায় সাইড দেওয়া নিয়ে জাবিতে হাতাহাতি, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) রাস্তায় সাইড দেওয়া নিয়ে ইংরেজি বিভাগের ৫২তম ব্যাচের ছাত্রী অরূপা রহমানকে গালিগালাজ ও হয়রানিমূলক কথা বলার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নূর-এ সুলতান ওরফে রিফাত একই বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
 
পরে এ ঘটনার সমাধান করতে গিয়ে রিফাতকে ওই ছাত্রীর বন্ধু ও ইমিডিয়েট সিনিয়ররা মিলে মারধরের পর পানিতে চুবিয়ে হত্যা চেষ্টা করেছে বলে পাল্টা অভিযোগ উঠেছে।

গত শনিবার (০৪ মে) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ফটকে এ ঘটনা ঘটে। পরদিন রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর ঘটনার বিচার চেয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দিয়েছেন ওই ছাত্রী ও রিফাত। আজ সোমবার (৬ মে) প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দু’পক্ষের অভিযোগপত্র এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার অরূপা রহমান এবং তার বন্ধু অরিত্র গুহ জয় বাংলা ফটকের খাবারের দোকানের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এসময় পিছন থেকে রিফাত রাস্তায় সাইড দেওয়ার জন্য কয়েকবার বলেন। তখন তারা রাস্তা থেকে সরে সামনে যাওয়ার জন্য জায়গা দিয়ে দেন। রিফাত সামনে এগিয়ে গিয়ে তাদেরকে রাস্তা ব্লক করে হাঁটতে নিষেধ করেন। তখন দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

এক পর্যায়ে রিফাতকে ওই ছাত্রী বেয়াদব বললে তিনি তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। তখন তারা পরিচয় দিতে গড়িমসি করেন। এক পর্যায়ে পরিচয় দিলে ওই ছাত্রী ও তার বন্ধু ৮ বছরের জুনিয়র জানার পর তিনি মেজাজ হারিয়ে ফেলেন এবং পাশে খাবার দোকানে থাকা একটি চেয়ার তুলে ভুক্তভোগী ছাত্রীর দিকে আঘাত করার চেষ্টা করেন।

পরে ওই ছাত্রী ঘটনাটি তার অন্যান্য সহপাঠী এবং ইমিডিয়েট সিনিয়রদের (৫১ তম ব্যাচ) জানান। এছাড়া জয় বাংলা ফটক থেকে রিকশা করে ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের দিকে যেতে চাইলে পথের মধ্যে রিফাত পরিবহণ চত্বর এলাকায় রিকশা থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই ছাত্রী রিকশা না থামিয়ে কলা ভবন এলাকায় গিয়ে বিষয়টি তার ইমিডিয়েট সিনিয়রদের জানান।

এসময় একই বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সজিব রিফাতকে ওই ছাত্রীর কাছে স্যরি বলতে বললে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। হাতাহাতির এক পর্যায়ে রিফাতকে (৪৫ ব্যাচ) পরিবহণ চত্বরের পাশের জলাশয়ে ফেলে পানিতে চুবানি দেন সজিব।

এ বিষয়ে অরূপা রহমান বলেন, ওই ভাই (রিফাত) আমাদের কাছে সাইড চাইলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে সরে যাই। কিন্তু তিনি আমাদের গালিগালাজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে চেয়ার তুলে মারতেও যান। তিনি নেশাগ্রস্ত ছিলেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

ঘটনার সমাধানে গিয়ে মারধরে জড়ানো শিক্ষার্থী মো. সজিব (৫১ ব্যাচ) বলেন, আমাদের বিভাগের জুনিয়রকে গালিগালাজ করছে। তাই আমরা পরিবহণ চত্বরে গিয়েছিলাম বিষয়টি সমাধান করার জন্য। সেখানে পৌঁছে দেখি ওই ভাই নেশা করতেছেন। আমি পরিচয় দেওয়ার পর তিনি আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন এবং গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে তিনি আমাকে মারধর শুরু করেন। এতে আমার গেঞ্জি ছিড়ে যায়। পরে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে আমরা পানিতে পড়ে যাই।

অভিযুক্ত নূর-এ সুলতান রিফাত বলেন, গতকাল বিকেলে জয় বাংলা ফটক দিয়ে আমি যাচ্ছিলাম। তখন রাস্তা ব্লক করে ওই ছাত্রী এক ছেলের হাত ধরে খুবই স্লো-মোশনে হাঁটছিলেন। তখন আমি তাদের কাছে কয়েকবার সাইড দিতে অনুরোধ করলে তারা আমার উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয় এবং তারা বিভিন্ন জায়গায় ফোন দিতে থাকেন। অবস্থা ভয়াবহ আঁচ করতে পেরে আমি সেখান থেকে পরিবহণ চত্বরে চলে আসি। সেখানে তারা বন্ধুবান্ধব নিয়ে এসে ১২-১৫ জন মিলে আমাকে গণপিটুনিসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমি হাঁপানি রোগী। তারা আমাকে ময়লা পানিতে চুবানি দিয়েছে।

/আহসান/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়