রাকসুর তফসিল ঘোষণার দাবিতে ছাত্রশিবিরের অবস্থান কর্মসূচি
রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
রাকসু ভবন ঘেরাও করে শাখা ছাত্রশিবিরের অবস্থান কর্মসূচি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে রাকসু ভবন ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শাখা ছাত্রশিবির।
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ভবন ঘেরাও করে এই কর্মসূচি পালন করেন শিবিরের নেতাকর্মীরা।
এসময় তারা ‘রাকসু নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘রাকসু না সিন্ডিকেট, রাকসু রাকসু’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘শিবিরের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘দিতে হবে দিতে হবে, রাকসু দিতে হবে’, ‘চলছে জুলাই চলবে, ছাত্রশিবির লড়বে’, ‘জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘দফা এক দাবি এক, রাকসু রোডম্যাপ’, ‘সাকিব রায়হান মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
অবস্থান চলাকালে রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, “গত মাসে রাকসু প্রশাসনে যারা ছিলেন, তারা বলেছিলেন ৩০ জুনের মধ্যে রাকসুর তফসিল ঘোষণা করবেন। কিন্তু প্রায় ১ মাস অতিক্রম হয়ে গেলেও তারা তাদের সেই ওয়াদা রক্ষা করেননি। উপাচার্য বলেছিলেন, ৫ মাসের মধ্যে রাকসু নির্বাচন দেওয়া হবে। কিন্তু ৮ মাস পার হয়ে গেলেও প্রশাসনের কোনো ধরনের পদক্ষেপ আমরা লক্ষ্য করতে পারছি না। যতক্ষণ পর্যন্ত রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।”
রাকসু নিয়ে টালবাহানা করলে কঠোর কর্মসুচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী রাকসু আমাদের অধিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি-নির্ধারণী ফোরামে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব রাকসুর মাধ্যমেই সম্ভব।”
তিনি বলেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমরা ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনোটাই তারা আমলে নেয়নি। এখন পর্যন্ত তারা দৃশ্যমান কোনো সংস্কার করতে পারেনি। আমরা মনে করছি, সিনেটে ছাত্রদের অংশগ্রহণ না থাকায় আমাদের সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে না।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ শতাংশ বাজেট ব্যয় হয় শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের জন্য। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় স্টেকহোল্ডার শিক্ষার্থীদের জন্য বাজেটের সামান্য অংশ বরাদ্দ রয়েছে। রাবি প্রশাসন সর্বপ্রথম রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু কোনো অদৃশ্য শক্তির বলে তা বাস্তববায়িত হয়নি, আমরা তা জানতে চাই।”
শিবির সভাপতি বলেন, “আজ নির্বাচন কমিশনের মিটিং রয়েছে। যদি কোনো ইতিবাচক সাড়া না পাই, তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। আমাদের আজকের এ অবস্থান কর্মসূচি রাকসুর তফসিল ঘোষণা না করা পর্যন্ত চলবে।”
এদিকে, বিকাল ৫টায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের দাবির মুখে রাকসু নির্বাচনের তফসিলের তারিখ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘোষণা পর অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করছে রাবি শাখা ছাত্রশিবির।
রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. আমজাদ হোসেন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাকসু নির্বাচন কমিশন ২০২৫ এর সিদ্ধান্তক্রমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) নির্বাচনী তফসিল আগামী ২৮ জুলাই বিকেল ৩টায় সিনেট ভবনে ঘোষণা করা হবে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী