ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে ঝুঁকি বাড়াবেন না’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৩৩, ১০ অক্টোবর ২০২১  
‘ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে ঝুঁকি বাড়াবেন না’

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, শেয়ারবাজারে স্বল্পপুঁজি নিয়ে ঝুঁকি নেবেন না। বিশেষ করে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে ঝুঁকি বাড়াবেন না। এ জন্য বিনিয়োগ শিক্ষাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

রোববার (১০ অক্টোবর) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে ‘সচেতন বিনিয়োগ, টেকসই পুঁজিবাজার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটের (বিএএসএম) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবিএ’র প্রেসিডিন্টে শরিফ আনোয়ার হোসেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। সম্মনিত অতিথি ছিলেন ডিএসই’র ব্যববস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভুঁইয়া। আলোচক ছিলেন ডিবিএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও ও ডিএসই’র পরিচালক মো. শাকিল রিজভী। আর অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএএসএম’র মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, ডিবিএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সিরাজুল ইসলাম।

বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘ফাইন্যান্সিয়াল টার্মস অনুযায়ী আপনি যত রিস্ক নেবেন, তত রিটার্ন বেশি হবে। এক্ষেত্রে যার সক্ষমতা আছে, সেই রিস্ক নিতে পারে। রিস্ক নিতে গিয়ে ক্ষতির আশঙ্কাও আছে। এক্ষেত্রে ডিবিএ মানুষকে সচেতন করার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কীভাবে শেয়ারবাজারে লেনদেন বাড়ানো যায়, কীভাবে মানুষকে শেয়ারবাজারমুখী করা যায়, কীভাবে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করা যায় এবং কীভাবে নতুন নতুন পণ্য বাজারে আনা যায়- তা নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা ডেরিভেটিবস ও কমোডিটি নিয়ে চাপ দিতে চাই না। আপনারা নিজেরাই উদ্যোগ নেবেন। অন্যথায় এই বাজার বড় করা যাবে না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে ডিএসই ও সিএসই।’

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের বাজার সুন্দরভাবে চলছে, লেনদেন বাড়ছে, অন্যান্য বিষয়গুলো সুন্দরভাবে চলছে। আমরা ফ্রন্ট্রিয়ার মার্কেট থেকে ইমার্জিং মার্কেটে যাওয়ার পথে আছি। সেখানে আমাদের বাধা-বিপত্তি থাকবে। সেগুলোকে কাটিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুত ইমার্জিং মার্কেটে পরিণত হবো।’

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটের মাধ্যমেই বুঝতে পারি, দেশের অর্থনীতিটা কেমন চলছে। ক্যাপিটাল মার্কেট যদি ভাইব্রেন্ট না হয়, তখন মনে হয় অর্থনীতি একটু স্লো হয়ে গেছে। একটা ভাইব্রেন্ট ক্যাপিটাল মার্কেটে বিভিন্ন ধরনের অংশগ্রহণ থাকে। নিশ্চয় সবাই রিটার্নের জন্য আসেন। তবে ভুল সিদ্ধান্তের কারণে কারো কারো ক্ষতিও হয়ে যায়। লাভ-ক্ষতি হবেই। পৃথিবীর সব ব্যবসা-বাণিজ্যে লাভ-ক্ষতি হয়। এই কারণেই সবাই ব্যবসা করে না। সবাই যদি লাভ করতো, তাহলে কেউ চাকরি করতো না।

তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি ধর্মে হালাল। তবে ব্যবসা করতে গিয়ে প্রতারণা বা মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া হারাম। ব্যবসা-বাণিজ্য করতে গিয়ে অনেকে অসতর্ক হয়ে যায়। এছাড়াও আদর্শের জায়গা থেকে সরে যায়। তাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে সমাজের অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলে। এ জিনিসগুলো আমাদের শেয়ারবাজারেও দেখা যায়। তাদের মতো অল্প কিছু লোকের ভুলে বা ইচ্ছাকৃত অসৎ উদ্দেশ্যের কারণে আমাদের অনেকের অসম্মান হয়।’

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট ভাইব্রেন্ট রাখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে ডিবিএ। তারাই এ মার্কেটকে জমিয়ে রাখে। শেয়ারবাজার সবার জন্য হলেও না বুঝে এখানে না আসার পরামর্শ দেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, অন্যথায় ঠকতে হবে। এজন্য অন্যকে দোষারোপ করে কোনো লাভ হবে না। সুতরাং আগে থেকে শিক্ষা ও সচেতনতা নিতে হবে। এ বিষয়ে ডিবিএ ও বিএএসএম ভালো প্রতিষ্ঠান।

বিএসইসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমাদের সৎ ও সুন্দরভাবে আয় করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাই ডিবিএকে বলবো সুন্দর পরিবেশে তার সকল সদস্যদেরকে ব্যবসা করানোর জন্য।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা যে ফ্রি লিমিট নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা বলছেন, এ বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রেখেছি। সিসিবিএল হয়ে গেলে এ সুবিধা বাড়িয়ে দেব। হয়তো আগামী ৩ মাসের মধ্যে সিসিবিএলের কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। এছাড়াও যেসব ব্রোকারদের লেনদেন ভালো, অতীত রেকর্ড ভালো, সেসব প্রতিষ্ঠানকে এ মাসের মধ্যেই আশা করি ফ্রি লিমিট নিয়ে সুখবর দেবো।’ 
 

এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়