ঢাকা     শুক্রবার   ০৩ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২০ ১৪৩১

আসন্ন বাজেটে ইআরএফ এর ২৬ প্রস্তাব 

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৯, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
আসন্ন বাজেটে ইআরএফ এর ২৬ প্রস্তাব 

আসন্ন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে আমদানি শুল্ক ব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তনসহ ২৬টি প্রস্তাব দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। সংগঠনটি ব্যক্তির করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেছে।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব ভবনে (এনবিআর) অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব প্রস্তাব দেওয়া হয়। ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধা ছাড়াও এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তা এই প্রাক-বাজেট আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।

ইআরএফের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, এখনো বাংলাদেশের ট্যারিফ এলডিসিগুলোর গড় ট্যারিফের চেয়ে বেশি। গত কয়েক বছর ধরে ট্যারিফ রেট কমিয়ে আনার কথা বলা হলেও তাতে বড় ধরনের অগ্রগতি দেখা যায়নি। এরই মধ্যে ভর্তুকি কমানোর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ সহায়তা কমানোর কার্যক্রম শুরু করেছে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এনবিআরকেও বিভিন্ন ধরনের ট্যারিফ ওয়াল কমানোর কাজ এই বাজেট থেকেই শুরু করা প্রয়োজন। অন্যথায় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে গেলে হঠাৎ করে শুল্ক কমিয়ে আনার ধাক্কা সামলানো কঠিন হবে। করছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও জবাবদিহি প্রয়োজন। এছাড়া প্রতি করছাড়ের আদেশের সঙ্গে কত রাজস্ব ক্ষতি হলো তার একটা প্রাক্কলন দেওয়া দরকার।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জেলা ও সিটি করপোরেশনে এখন বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সেখানে এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) মতো মিডিয়াম করদাতা ইউনিট বা এমটিইউ খোলা যেতে পারে।

সংগঠনটি মনে করে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে ব্যর্থ হলে আয়কর আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার কারণে অনেকেই রিটার্ন জমা দিতে নিরুৎসাহিত হতে পারেন। এসব ধারা পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।

সংগঠনটির অন্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে-বাড়তি দেওয়া কর এমএফএসের মাধ্যমে ফেরতের ব্যবস্থা করা। যাদের করযোগ্য আয় নেই তাদের ব্যাংক সুদের ওপর কর্তন করা টাকা ফেরত দেওয়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, শিক্ষা ও চিকিৎসা উপকরণে কর হার ৫ শতাংশে সীমিত রাখা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিকাশে পৃথক রাজস্ব নীতি প্রণয়ন এবং বাজেটে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব পরিকল্পনা ও তার জন্য বরাদ্দ রাখা।

এছাড়া বেসরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডকে করমুক্ত রাখা, করপোরেট কোম্পানিগুলোর রিটার্ন দেওয়ার হার এত কম কেন, তা নিয়ে এনবিআর-ইআরএফ যৌথ জরিপ চালু করা, ব্যক্তি করদাতাদের সর্বোচ্চ করহার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ করা, ভ্যাটের হার ৭ শতাংশ করা, কাস্টমসের টাইম রিলিজ স্টাডির মতো আয়কর ও ভ্যাটেও একই রকম স্টাডি করার প্রস্তাব দিয়েছে ইআরএফ।

গভায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ইআরএফের প্রস্তাবগুলো বিবেচনার আশ্বাস দেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা করজাল বাড়াতে সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। আমি আপনাদের উৎসাহিত করতে চাই। অনেকেই স্টেজে দাঁড়িয়ে বলে আমাদের ট্যাক্স জিডিপি রেশিও কম, অন্যদিকে আবার কর অব্যাহতির আবেদন করে।

টিআইএনধারী ও রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

প্রান্তিক মানুষকে করজালের আওতায় আনতে আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতকারী বা (টিআরপি) নিয়োগ দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকের অভিযোগ গ্রাম-গঞ্জে এখন অনেক কোটিপতি, তারা ট্যাক্স দেন না। তাদের করের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। কিন্তু গ্রামে গিয়ে তাদের ধরে নিয়ে আসতে হবে কেন? টিআরপি প্রোগ্রামটা যে কোনোভাবে আমরা সফল করবো। আমাদের অন্য কোনো পথ নেই।

/হাসনাত/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ