ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

দেশে ২ কোটি কিডনি রোগী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৩, ২৬ নভেম্বর ২০২২  
দেশে ২ কোটি কিডনি রোগী

কিডনি ফাউন্ডেশনের বাৎসরিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা

কিড‌নি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ জানিয়েছেন, সারা বিশ্বে ৮৫ কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত। বাংলাদে‌শে কিডনি রোগীর সংখ্যা ২ কোটির কাছাকাছি।

শনিবার (২৬ নভেম্বর) কিডনি ফাউন্ডেশনের দুই দিনব্যাপী বাৎসরিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব তথ্য জানান।

অধ্যাপক হারুন বলেন, বাংলাদেশে যে ২ কোটি কিডনি রোগী আছে, তাদের মধ্যে ৪০ হাজার রোগীর প্রতি বছরে কিডনি বিকল হয়। এদের ৭৫ ভাগই ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজনের চিকিৎসার অভাবে মারা যান। এছাড়া, হঠাৎ করে কিডনি বিকল হয়ে প্রতি বছর আরও ২০ হাজার রোগী মারা যান।

১৮তম বাৎসরিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে দেশ-বিদেশের কিডনি ও ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিশেষজ্ঞরা অংশ নিচ্ছেন। কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহম্মেদ। আরও উপস্থিত ছিলেন—রয়াল লন্ডন হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ মাগদি ইয়াকুব, বিএসএমএমইউ‘র উপ-উপচার্য অধ্যাপক এ কে এম মোশারফ হোসেন।

অধ্যাপক ডা. হারুন বলেন, কিডনি রোগীদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য জেলা পর্যায়ে ডায়ালাইসিসের ব্যবস্থা রাখা এবং প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কিডনি সংযোজনের ব্যবস্থা রাখা দরকার। এর সঙ্গে সঙ্গে কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ, ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিশেষজ্ঞ ও নার্সদের উচ্চতর ট্রেনিং বিশেষভাবে প্রয়োজন।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য ডা. মো. শরফুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাংলাদেশে কিডনি রোগ ও কিডনি অকেজো রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়‌ছে। দুটো কিডনি অকেজো হয়ে গেলে রোগীকে বেঁচে থাকার জন্য ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজন করতে হয়। বাংলাদেশে এ চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। তবে, এই চিকিৎসা ব্যয়বহুল এবং সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।

তবে, কিছু সরকারি হাসপাতাল এবং বেসরকারি পর্যায়ে কিছু অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, যেমন: কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এই কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজনের ক্ষেত্রে ১৬ বছর ধরে স্বল্পমূল্যে মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছে ব‌লেও জানান উপাচার্য।

তি‌নি ব‌লেন, বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মরণোত্তর কিডনি দানের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ধরনের সেবা অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অনুসরণ করলে মানুষের উপকার হবে।

অধ্যাপক মুহাম্মদ মাগদি ইয়াকুব বলেন, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্ত চাপ রোগ নিয়ন্ত্রণে কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক কিডনি সমিতির হাসপাতালের সঙ্গে রিনাল সিস্টার সেন্টার প্রোগ্রামের মাধ্যমে কাজ করছি। আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে আছে কিডনি রোগীর উন্নত চিকিৎসায় গবেষণা সহায়তা দেওয়া এবং কিডনি বিশেজ্ঞদের উচ্চতর ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা। এরইমধ্যে আমরা সাত দিনব্যাপী বিভিন্ন হাসপাতালে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

অধ্যাপক এ কে এম মোশাররফ হোসেন বলেন, কিডনি রোগের প্রধান কারণ হচ্ছে ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ বছর ধরে ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন করছে।

কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্স ইনস্টিটিউটে কিভাবে কিডনি অকেজো রোগীদের খুব কম খরচে চিকিৎসা দেয় তার বিস্তারিত আলোচনা করেন অধ্যাপক রুহুল আমিন রুবেল। ৩০০ বেডের কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে প্রতিদিন ২০০-২৫০ রোগী ডায়ালাইসিস করে থাকেন। ইতোমধ্যে ৬৫০ জনের বেশি রোগীর শরী‌রে সফলভাবে কিডনি সংযোজন করা হয়েছে। এই হাসপাতালে একটি আধুনিক ল্যাবরেটরি আছে। যেখানে ৫০ শতাংশ কম খর‌চে সব ধরনের পরীক্ষা করা যায়। প্রতিদিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মাত্র ৪০০-৫০০ টাকায় রোগী দেখে থাকেন। রোগী বিনা বেড ভাড়ায় ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে পারেন এখা‌নে।

‌মেয়া/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়