ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

যেভাবে ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছিল পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৮, ২ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১৯:৩৭, ২ আগস্ট ২০২৫
যেভাবে ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছিল পাকিস্তান

৭ মে মধ্যরাতের ঠিক পরে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর অপারেশন রুমের পর্দা লাল রঙে আলোকিত হয়ে ওঠে। রুমে থাকা কম্পিউটার স্ক্রিনে সীমান্তের ওপারে ভারতে কয়েক ডজন সক্রিয় শত্রু বিমানের অবস্থান দেখানো হচ্ছিল। ভারতীয় আক্রমণের আশঙ্কায় বিমানবাহিনী প্রধান জহির সিধু কয়েকদিন ধরে অপরাশেরন রুমের ঠিক পাশেই একটি গদিতে ঘুমাচ্ছিলেন।

ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছিল নয়াদিল্লি। ইসলামাবাদ এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও, ভারত প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ৭ মে ভোরে পাকিস্তানে বিমান হামলার মাধ্যমে এই প্রতিশ্রুতি পূরণ করে ভারত।

সিধু চীনা তৈরি জে-১০সি যুদ্ধবিমানগুলোকে আক্রমণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অপারেশন রুমে উপস্থিত পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন (পিএএফ) কর্মকর্তা বলেন, সিধু তার কর্মীদের ভারতীয় রাফালকে লক্ষ্যবস্তু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ফ্রান্সের তৈরি এই রাফাল ছিল ভারতীয় বিমানবাহিনীর গর্ব।

পাকিস্তানি ওই কর্মকর্তা বিমানবাহিনী প্রধানের নির্দেশের কথা উল্লেখ করে বলেন, “তিনি রাফাল চেয়েছিলেন।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতের অন্ধকারে সংঘটিত এই এক ঘন্টাব্যাপী যুদ্ধে প্রায় ১১০টি বিমান অংশ নিয়েছিল, যা এটিকে কয়েক দশকের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম বিমান যুদ্ধে পরিণত করেছে।

মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে মে মাসে রয়টার্স জানিয়েছিল, জে-১০ কমপক্ষে একটি রাফালে ভূপাতিত করেছে। এর ভূপাতিতকরণ সামরিক সম্প্রদায়ের অনেককে অবাক করেছে এবং অপ্রমাণিত চীনা বিকল্পগুলির বিরুদ্ধে পশ্চিমা সামরিক সরঞ্জামের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

রাফালকে গুলি করে ভূপাতিত করার খবর প্রকাশের পর এর উৎপাদনাকারী প্রতিষ্ঠান ড্যাসাল্টের শেয়ারের দরপতন ঘটেছিল। রাফাল কেনার জন্য অপেক্ষমান ছিল ইন্দোনেশিয়া। সেই ইন্দোনেশিয়া ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ের পরে জানিয়েছে, তারা এখন জে-১০ কেনার কথা বিবেচনা করছে।

কিন্তু দুই ভারতীয় কর্মকর্তা এবং তাদের তিন পাকিস্তানি প্রতিপক্ষের সাথে রয়টার্সের সাক্ষাৎকারে দেখা গেছে, রাফালের কার্যকারিতা মূল সমস্যা ছিল না। বরং জে-১০ যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপ করা চীন-নির্মিত পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা সম্পর্কে ভারতীয় গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল এর ভূপাতিতকরণের মূল কারণ। চীন এবং পাকিস্তানই একমাত্র দেশ যারা জে-১০, যা ভিগোরাস ড্রাগন নামে পরিচিত এবং পিএল-১৫ উভয়ই পরিচালনা করে।

ত্রুটিপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্যের কারণে রাফাল পাইলটরা পাকিস্তানের গুলিবর্ষণের দূরত্বের বাইরে থাকার মিথ্যা ধারণা পেয়েছিলেন। তাদের বিশ্বাস ছিল ১৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম নয় পিএল-১৫।

পাকিস্তান বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা বলেন, “আমরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছি।”

ভারতীয় পাইলটদের বিভ্রান্ত করার জন্য ইসলামাবাদ দিল্লির সিস্টেমে একটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধবিমান আক্রমণ চালিয়েছে। 

লন্ডনের রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের বিমান যুদ্ধ বিশেষজ্ঞ জাস্টিন ব্রঙ্ক বলেন, “ভারতীয়রা গুলি চালানোর আশা করেনি।  পিএল-১৫ স্পষ্টতই দীর্ঘ পরিসরে খুব সক্ষম।”

পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের মতে, রাফালে আঘাত করা পিএল-১৫টি প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূর থেকে ছোঁড়া হয়েছিল। এটি রেকর্ড করা সবচেয়ে দূরপাল্লার আকাশ থেকে আকাশে হামলার মধ্যে একটি হবে।

ভারতের প্রতিরক্ষা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গোয়েন্দা ত্রুটি সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য অনুরোধের জবাব দেয়নি। দিল্লি রাফাল বিমান ভূপাতিত করার বিষয়টি স্বীকার করেনি, তবে ফ্রান্সের বিমানবাহিনী প্রধান জুন মাসে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তিনি রাফাল যুদ্ধবিমান এবং রাশিয়ার তৈরি সুখোইসহ ভারতের আরো দুটি বিমানের ক্ষতির প্রমাণ দেখেছেন। 

ঢাকা/শাহেদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়